জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে জাজিরার কালোজিরার মধু ব্রান্ডিং ও বাজারজাত করার লক্ষ্যে দিনব্যাপী চলে এই মেলা। বুধবার (৮-মার্চ) উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী চলা মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ১২’টি কালোজিরা মৌ খামার অংশ নেয়।
মেলার মূল আকর্ষণ ছিলো জাজিরার কালোজিরার মধু। কালোজিরার মধু ছাড়াও সরিষা, লিচু সহ সুন্দরবনের বিভিন্ন রকম মধু বিক্রয়ের জন্যেও মেলায় আসে খামারীরা। খামারিদের থেকে খাঁটি মধু কিনতে ক্রেতাদের উপস্থিতিও ছিলো ব্যাপক।
মেলায় মধু বিক্রি করতে আসা ইভা মৌ-খামারের স্বত্বাধিকারী জাহিদ হোসেন নামে একজন জানান, আমাদের জাজিরার কালোজিরার মধুর চাহিদা সারা বছর থাকে এবং তুলনামূলক ভাল দাম পাই। এধরণের মেলা ক্রেতাদের কাছে আমাদের খাটি মধু পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।
মেলায় মধু কিনতে আসা নিজাম উদ্দিন শিকদার নামে একজন বলেন, আমাদের উপজেলায় এই ধরনের মেলার আয়োজন দেখে খুব ভালো লাগছে। আমারা বিভিন্ন খামারের মধু দেখে মধু কেনার সুযোগ পাই। এখানে খাঁটি মধু পাওয়া যায় বলে মেলার অপেক্ষায় ছিলাম। মধু কিনতে পেরে ভালো লাগছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, জাজিরায় উৎপাদিত উন্নত মানের পুষ্টি গুন সমৃদ্ধ কালোজিরার মধুকে ‘জাজিরার কালোজিরার মধু’ নামে ব্রান্ডিং করনে জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিভাগের উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি অফিস দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করে। মেলায় বিভিন্ন অনলাইন ও সুপার থেকে ক্রেতারা মধু কিনতে আসে। এবং ক্রয়কৃত মধু প্রক্রিয়াজাত করে তাদের নিজস্ব শোরুম থেকে বিক্রি করা হবে। এছাড়াও স্থানীয় সাধারণ মানুষ মেলা থেকে মধু কিনে থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ জামাল হোসেন জানান, জাজিরা উপজেলা ফসল চাষাবাদের জন্য বিখ্যাত। আমারা ফসলের মাঠে মৌ চাষের উদ্যোগ নেওয়ার ফলে পরাগায়ন বৃদ্ধি হচ্ছে। এরফলে প্রায় ১৭% ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে মৌ-চাষের মাধ্যমে বাড়তি আয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুল হাসান সোহেল বলেন, শরীয়তপুরের একটি অগ্রাধিকার মূলক ব্রান্ডিং কার্যক্রম হল জাজিরার কালোজিরার মধু। এটিকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্রান্ডিং এ পরিনত করার লক্ষ্যে এধরণের কার্যক্রম প্রশংসনীয়। স্থানীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে বেকার সমস্যা দূর করতে নতুন নতুন মৌ-শিল্পের বিকাশে এই মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবল বলে আমরা বিশ্বাস করি।
উল্লেখ্য, জাজিরাতে চলতি বছর ১’হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে কালোজিরা আবাদ করা হয়েছে। ৫’হাজার ৬’শ ৭৮’টি মৌ-বক্স স্থাপনের মাধ্যমে ৬৭’মেট্রিকটন কালোজিরার মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৫’কোটি ৩৬-লাখ টাকার উপরে।