সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণী (২০) কে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগে সোমবার গভীর রাতে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে থানায় মামলা হয়েছে। ভূক্তভোগী ওই তরুণী বাদী হয়ে ধর্মপাশা থানা পুলিশের কনস্টেবল আইনুল হক(২৮) কে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ওই পুলিশ কনস্টেবলের বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ইসলামপুর দুভাগ গ্রামে। তরুণী ধর্মপাশা উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার,ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও ভূক্তভোগী ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া তরুণী কলেজে আসা যাওয়ার পথিমধ্যে পরিচয় হওয়র সূত্র ধরে পুলিশ কনস্টবল আইনুল হকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
বছর খানেক ধরে তাঁদের দুইজনের মধ্যে নিয়মিত মোবাইলে কথাবার্তা,হোয়াটঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে যেগাযোগ, ছবি ও ভিডিও আদান প্রদান হতো। বিভিন্ন সময় তাঁদের দেখা সাক্ষাতও হয়েছে। ওই তরুণী নেত্রকোনার একটি কলেজ থেকে এবারের অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষা গত ২৬জুন ওই তরুণী নেত্রকোনার একটি কলেজে এইচএসসি বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে।
ওইদিন বেলা দুইটার দিকে ওই পুলিশ কনস্টেবল ওই কলেজ ছাত্রীকে ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে জানান যে আমি ছুটি নিছি,তুমি ধর্মপাশা উপজেলার মহদীপুর স্পিডবোট ঘাটে চলে এসো ।ওই তরুণী তখন বলেন আমাকে কোথায় নিয়ে যাবে? তখন ওই কনস্টেবল জানায় সে তাঁকে সুনামগঞ্জ শহরে ঘুরতে নিয়ে যাবে।
পরে নেত্রকোনা থেকে ওইদিন বেলা আড়াইটার দিকে সিএনজি যোগে রওয়ানা হয়ে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ধর্মপাশা উপজেলার মহদীপুর স্পিডবোট ঘাটে এসে পৌঁছেন ওই তরুণী। তখন ওই তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখানোসহ নানা কথা বলে আইনুল তাঁকে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে নিয়ে যান। ওইদিন রাত আট ঘটিকার সময় সুনামগঞ্জ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে তরুণীর নাম গোপন করে রাত্রি যাপন করে ।
হোটেলের কক্ষে বিয়ের প্রলোভন দেথিয়ে ও ফুসলিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরদিন ২৭জুন তাঁরা দুইজন ধর্মপাশায় চলে আসেন। কিন্তু বিয়ের কথা তুললেই নানাভাবে এড়িয়ে যেতেন আইনুল। গত ২৮জুন বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে রওয়ানা হয়ে ওই তরুণী নেত্রকোনা জেলা শহরে চলে যান।
২৯জুন বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় তিনি অংশ নেন। পরীক্ষা শেষে ওই পুলিশ কনস্টেবলকে বিয়ের কথা বললে তিনি নানা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে ও বিয়ের করতে অস্বীকার করে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। নিরুপায় হয়ে ২৯ জুন রাত আটটার দিকে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী নিজে থানায় এসে ঘটনাটি থানার ওসিকে ও পর্যায়ক্রমে পরিবারের সদস্য এবং আত্বীয় স্বজনকে ঘটনাটি অবগত করেন।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ওই তরুণী ঘটনাটি অবগত করার পর পরই কনস্টেবল আইনুল হক কে আমরা পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি। ওই তরুণী বাদী হয়ে সোমবার গভীর রাতে পুলিশ কনন্টেবল আইনুল হককে আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা করেছেন।
এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মামলার আসামি পুলিশ কনস্টেবল আইনুল হককে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ভিকটিকমে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।