লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নে রাস্তার কার্লভার্টের মুখে বালু ফেলে ভরাট করায় ডুবে গেছে কয়েকশ একর জমির বোরো ধান,
পাট এবং আমন ধানের বীজতলা। আবাদী জমিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেঙে গেছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ফকিরপাড়া ইউনিয়নের উত্তরটারী এলাকায় প্রায় পনেরফুট রাস্তা ভেঙে প্রবলভাবে প্রবাহিত হচ্ছে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জমে থাকা পানি।
স্থানীয়রা বলছেন সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম তার চাচা বাচ্চা মিয়াকে ক্ষমতার প্রভাবে প্রভাবিত করে পানি নিস্কাশনের একমাত্র কার্লভার্ট এর মুখ বালু ভরাট করেন। এতে গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে কয়েকশত একর জমির বোরো ধান এবং আমন ধানের বীজতলা ডুবে যায়। ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য তাসাব্বির হোসেন (অর্ণিক) খন্দকার ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি নিস্কাশনের জন্য ব্যবস্থা করতে বলেন। তবে গত রাতের তুমুল বৃষ্টির পানি প্রবাহের ফলে বানিয়াটারী-কামারটারী-শফিরহাট যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা ধ্বসে যায়। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ।
ওই রাস্তায় চলাচলকারী সোলেমান মিয়া বলেন, প্রায় আটমাস আগে বালু ভরাট করার সময় বাচ্চা মিয়া ওরফে ঠুটা বাচ্চা ও তার ছেলেদের নিষেধ করা হয়। তবে তারা সেসময় সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলামের প্রভাবে কারো বাধা না মেনে কার্লভার্ট এর মুখ বন্ধ করে দেন। এতে প্রায় পাঁচ একর জমির আমন ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে এবং চলাচলের রাস্তা না থাকায় আমাদের তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনা-কাটার জন্য যেতে হচ্ছে।
তবে জোরপুর্বক কার্লভার্টের মুখ ভরাট করেননি বলে দাবী করছেন জমির মালিক বাচ্চা মিয়া ওরফে ঠুটা বাচ্চা। তিনি বলছেন, সাবেক বড়খাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মরহুম আমিরুল হক আমু দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কার্লভার্টটি নির্মানের সময় আমি নিষেধ করেছিলাম। সেসময় তিনি পরের ব্যাপার পরেই দেখা যাবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। এখন আমার দুই ছেলের জন্য আলাদা বসতবাড়ী নির্মাণ করার জন্য গতবছর আমি জমিতে বালু ভরাট করি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তাসাব্বির হোসেন (অর্ণিক) খন্দকার বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে গতকাল ঘটনাস্থলে এসে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করে যাই। তবে রাতের বেলা তুমুল বৃষ্টি হয়ে রাস্তার প্রায় পনেরফুট জায়গা ধ্বসে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আমরা দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, বিষয়টি ওই এলাকার ইউপি সদস্যের মাধ্যমে জেনেছি। যেহেতু রাস্তাটি উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন সেহেতু দ্রুত সংস্কার এবং স্থায়ীভাবে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করে এলাকার মানুষদের দুর্ভোগ লাঘব করা হবে।