মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩২ অপরাহ্ন , ই-পেপার

গলাচিপায় বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশত: ১৪৪ ধারা জারি

অর্ণব নারায়ণ ভূঁইয়া, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  • আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫

গলাচিপায় বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশত: ১৪৪ ধারা জারি

পটুয়াখালী, ১৩ জুন ২০২৫ – পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বাজারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং গণ অধিকার পরিষদের (জিওপি) নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এই হামলা-পাল্টা হামলা সংঘটিত হয়। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর রাত দেড়টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ ছিলেন বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বেগ পেতে হয়। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। এর ফলে সকল প্রকার জনসমাগম, মিছিল ও সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গলাচিপা ও পটুয়াখালীতে বিএনপি-ছাত্রদল এবং গণ অধিকার পরিষদ পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তায় গাছ ফেলে ভিপি নুরকে উপজেলার বকুলবাড়িয়ায় রাত দেড়টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখেন।
বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ঈদুল আজহার পর গলাচিপা ও দশমিনায় জনসভায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর স্থানীয় বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। এর প্রতিবাদে বুধবার রাতে তার নিজের ইউনিয়ন গলাচিপার চর কাজলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
তারা আরও জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনার প্রতিবাদে চর কাজলে গণ অধিকার পরিষদও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। বিক্ষোভ শেষে দলটির নেতাকর্মীরা রাত ৮টার দিকে চর কাজল বিএনপি অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলায় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
গণ অধিকার পরিষদ পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহা আলম অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা ভিপি নুরের নিজের ইউনিয়ন চর বিশ্বাস ও চর শিবায় গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। তিনি জানান, এই হামলায় নুরের ছোট ভাই আমিনুল ইসলাম নুরসহ প্রায় ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এদিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন বকুলবাড়িয়ায় অবরুদ্ধ ভিপি নুরুল হক নুরকে উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
রাত দেড়টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে নুর জানান, “রাত পৌনে ১০টা থেকে ১টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত এখনো অবরুদ্ধ। পুলিশ-সেনাবাহিনী এসে এখনো সন্ত্রাসীদের রাস্তা থেকে হঠাতে পারেনি।”
এর আগে পাতাবুনিয়ার এক সভায় তিনি বলেন, হাসান মামুনের নির্দেশে তার নিজের এলাকায় হামলার শিকারের ঘটনায় তিনি লজ্জিত।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি যুগান্তরকে জানান, পটুয়াখালী একটি শান্ত জেলা। তিনি আরও বলেন, ভিপি নুরুল হক নুরের উত্তেজনাকর বক্তব্য এবং বৃহস্পতিবার রাতে গলাচিপার চর কাজলে বিএনপি অফিসে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করেছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এরপরও সকল দলীয় নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান জানান, বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..