লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহতের পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এলাকাজুড়ে।
হামলা-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘরে বাড়িঘরে ।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে থেকে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকায় ৩টি বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে রায়পুর উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব জিএম শামীমের অনুসারীরা উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবায়েদ উল্যা গাজী, উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন খান ও সদস্য আনোয়ার মালের বসতঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
ভুক্তভোগীরা সবাই উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্র জানায়, ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব জিএম শামীম ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর জের ধরে দফায় দফায় শামীম ও ফারুকের নেতাকর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে ঐ ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষকদলসহ সব অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম বিলুপ্ত করা হয়। সোমবার (৭ এপ্রিল) আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেড়ি বাঁধ ও বাবুরহাট এলাকায় কৃষকদল নেতা শামীম গাজী ও ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচতি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহবায়ক ফারুক গাজীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে একজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়। ঘটনার সময় বিল্লাল মাঝি, আবু তাহের মাঝি, জিহাদ হোসাইনের বসতবাড়িতে শামীমের অনুসারীরা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এর জের ধরেই মঙ্গলবার দুপুরে ফের হামলা চালিয়ে শামিম গাজীর অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের লোকজনের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবাদুল্লাহ গাজী বলেন অন্তত তার ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বর্তমানে দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা-ভাঙচুর, হত্যা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বিএনপির কয়েকজন নেতা জানায়, কৃষক দল নেতা শামীম ও বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজের লোকজন ৫ আগস্টের পর দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। এরমধ্যে সাইজ উদ্দিন খুন হয়েছে। সে শামীমের অনুসারী ছিল। এর জের ধরে শামীমের অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের অনুসারীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) মো. জামিলুল হক বলেন, সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কেউ থানায় কোন মামলাও করেনি। মামলা করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, নিহত বিএনপিকর্মী সাইজ উদ্দিন উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরঘাষিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ৩ মাস আগে স্পেন থেকে দেশে আসেন।