লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভার মেয়র ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাকে ষড়যন্ত্র আখ্যায়িত করে প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলের পৌরসভা কার্যালয়ের সম্মুখে রায়পুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পৌর কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে ২১ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলম বাদী হয়ে মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট, কার্য সহকারী মহিউদ্দিন বিপু, ড্রাইভার মো. সবুজ, সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহমুদুন্নবী, মো. আবু তাহের সাগরকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তার আগে অনুমোদনহীন নকশায় একতা টাওয়ার নামের ভবনের সিঁড়ির কাজ করার অভিযোগে বাধা দেওয়ায় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আহত করার অভিযোগে কার্যসহকারী মো. মহিন উদ্দিন বিপু বাদী হয়ে গত ১২ মার্চ একই আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় মঞ্জুরুল আলম, আমির হোসেন ও সৈয়দ আহম্মদকে আসামি করা হয়। দু’টি মামলাই রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্ত করতে আদালত নির্দেশনা দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌর শহরের থানা সড়কে ‘একতা টাওয়ার’ নামের একটি ভবন নির্মাণ করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলম ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ আহম্মদ। প্রায় ২ বছর আগে রাস্তায় ভবনের কাঁদা পানি ফেলা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। এরপর অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করতে পৌরসভা থেকে কয়েকবার তাগাদা দেওয়া হয়। সর্বশেষ গত ৫ মার্চ ভবনের সিড়ির পাশে বর্ধিত নির্মাণ কাজ করতে গেলে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাধা দেন। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়। এরপর মামলা, পাল্টা মামলায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন পৌর কাউন্সিলর মো. ইউছুফ মিয়া, আবুল হোসেন, আবু নাছের মঞ্জু, রুবেল প্রধানিয়া, মাহবুবুর রহমান রিজভী, প্রকৌশলী কামরুল হাসান, আবু তাহের, মো. মাহমুদুন্নবী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা রিনা রানী রায়, কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন মানিক, কামরুল হাসান রাছেল, পীরজাদা আরমান হোসেন, এজাজ হোসেন প্রমুখ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরু আলম বলেন, ‘আমরা অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবন করেছি। মেয়র ও তাঁর লোকজন অন্যায়ভাবে আমাদেরকে হয়রানি করছে। আমাদের সিঁড়ির একাংশ ভেঙ্গে দিয়েছে। তাঁদের মানববন্ধনে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমি মেয়রের চাঁদা দাবির যে অভিযোগ করেছি, তা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হবো। ’
রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, ‘আরাম আয়েস ও বিলাসী জীবন জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের জন্মস্থানে এসেছি। দায়িত্ব, সেবা, কর্তব্য এবং পৌরবাসীদের কাছে আমার যে ওয়াদা রয়েছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য। এসেছি আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পরিকল্পিত শহর গঠন করতে। মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা বা কোন ষড়যন্ত্রই আমাকে জনগণের জন্য ভালো কাজ থেকে বিরত রাখতে পারবে না।’