লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ মাগুরী গ্রামে প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের বসত ঘরে অগ্নী কান্ডের ঘটনায় দগ্ধ স্ত্রী জোৎসনা বেগম শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ হসপিটালে ৮দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ে (আজ)বুধবার বিকালে মারা গেছেন। একই হসপিটালে তাদের সাড়ে ৫ বছরের শিশু পুত্র পুত্র রুপন চিকিৎসাধীন রয়েছে। অগ্নীকান্ডের ঘটনাস্থলেই প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের বিবাহিত ও অন্তঃসত্বা মেয়ে অনিকা সুলতানা ঘটনাস্থলেই পুড়ে ছাই হয়েগেছে। জোৎসনা বেগমের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছালে এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ঘরের ভিতর ঘুমিয়ে থাকা আনোয়ার হোসেনের বিবাহিত মেয়ে ও স্থানীয় গোপালপুর দ্বারিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী অন্তঃস্বত্বা অনিকা সুলতানা (১৭)আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই চাই হয়ে যায়।
অগ্নীদগ্ধ অবস্থায় আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী জোৎসনা বেগম (৪০) ও ছোট ছেলে রুপন(৫)কে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে প্রেরণ করার পর চিকিৎসকরা তাদেরকে আশংকা জনক ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ণ হসপিটাল প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের ভাই বাচ্ছু অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে অনিকা সুলতানার স্বামী পার্শ্ববর্তী গ্রামের আব্দুস সহিদের পুত্র ও হানিফ মিয়াজীর হাটের মুদী ব্যবসায়ি রতন ও তার বন্ধু রাজারাম ঘোষ গ্রামের কামাল হোসেনের পুত্র শুভকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর অনিকার সাথে তার স্বামী রতনের বণিবনা না হওয়ায় অনিকা তিনমাস ধরে পিত্রালয়ে বসবাস করে আসছিল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চন্দ্রগঞ্জ থানার দত্তপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের এস আই আলহাজ্ব উদ্দিন জানান, আটক দুই জনকে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। আবেদনটি শুনানীর জন্য রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিনের ন্যায় গ্রামবাসীর সাথে তাদের একাকী বাড়িতে রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাদের টিনের তৈরী বসত ঘরের দুটি দরজা বাইর থেকে আটকিয়ে দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আনোয়ার হোসেনের বড় ছেলে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র রিফাত আগুনের ঘটনা টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে পরিবারের সদস্যরা ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেও বের হতে পারেনি। রিফাত ঘরের একটি টিনের বেড়া ভেঙ্গে বের হয়ে ঘরের টিনে পিটানোর পাশাপাশি চিৎকার করতে থাকে। এ সময় সে তার মা ও ছোট ভাইকে বের করে আনতে সক্ষম হলেও বোনকে বের করে আনার আগেই পুরো ঘর দাউদাউ করে আগুন জ্বলার কারণে তাকে বের করে আনতে পারেনি। গ্রামবাসী এসে স্থানীয় ভাবে প্রাণপন চেষ্টা করেও অগুন নিয়ন্তণে আনতে পারেনি। প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রতিবেশীরা জানায়, চিৎকার শুনে আমরা ঘটনাস্থলে এসে দেখি ঘরের চারপাশে আগুন দাউ দাউ করে জলছে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বোন আনিকা আক্তার(১৫)কে উদ্ধার করতে গিয়েও আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আর তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে আনিকার পুড়ে ছাই হওয়া মৃত দেহ উদ্ধার করে।