জয়পুরহাটে সাজেদা ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা আদালতে এ হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরকীয়ার জেরে হত্যাকারীরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। সোমবার(১০ অক্টোবর) দুপুরে জয়পুরহাট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো.তরিকুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আটককৃতরা হলেন- জয়পুরহাট সদর উপজেলার খনজনপুর এলাকার আনিছুর রহমানের ছেলে আবু সাঈদ ও একই মহল্লার জহুরুল ইসলামের ছেলে রাব্বী হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানান, জয়পুরহাট শহরের জানিয়ার বাগান এলাকায় ডা. পারভীনের ৫ তলা বাসায় ছোট মেয়ে আরিফা কে নিয়ে ভাড়া থাকতেন সাজেদা ইসলাম সাজু। তার স্বামী হাফিজুল ইসলাম জেলার বাহিরে চাকরি করতেন। আর তার মেয়ে যেই স্কুলে পড়াশোনা করতো সেই স্কুলেই কম্পিউটার অপারেটরের চাকরি করতেন আবু সাঈদ।
সেই স্কুলে যাওয়া-আসার সুবাদেই সাঈদের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক হয় সাজেদার। এই সম্পর্ক দীর্ঘ দিন থেকে চলে আসছিল। গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে মেয়ে আরিফা এসএসসি পরীক্ষা দিতে যায়। সেইদিন আবু সাঈদের সাথে সাজেদার মোবাইলে কথা হয়।
এরপর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সাঈদ রাব্বীকে নিয়ে ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসেন। এসময় সাজেদাকে একা পেয়ে তারা তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলে সে বাধা দেয়। তখন আসামিরা সাজেদার হাত-পা চেপে ধরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে হাত ও মুখ বেধে রেখে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তার মেয়ে পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে এসে তার মায়ের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ বিকেলে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ২৯ সেপ্টেম্বর গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি হত্যা মামলার দায়ের করেন।
তিনি আরও জানান, এদিকে ঘটনার পর থেকেই হত্যার আসল রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার সাথে জড়িত রাব্বীকে ফুলবাড়ী থানা এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া জবানবন্দিতে আবু সাঈদকে আটক করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন এন্ড অপস্) ফারজানা হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোশফেকুর রহমান,জয়পুরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম, জেলা ডিবি পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহেদ আল মামুনসহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা বৃন্দরা।