বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০১:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
নড়াইলে চিত্রা নদী থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটে দাঁড়িয়ে থাকা পিকাপ ভ্যান এর পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় নি*হত ১ জোবিঅ সোনারগাঁও এর উদ্যোগে অবৈধ তিতাস গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ কাজ চলমান । বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে মোংলা থানার ওসি (তদন্ত) ক্লোজড বাগেরহাটের রামপাল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে আলী সরদার নামে এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার লোহাগড়ায় বিয়ের ৫ মাস না পেরোতেই দূর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে যুবক খুন সাভারে তিনশত পিছ ইয়াবাসহ যুবলীগ নেতা গ্রেফতার নড়াইলে মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় কিশোরের আত্মহত্যা সাতক্ষীরায় তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন সেরা ৫ জন কৃষকে পুরস্কার বিতরণ এসএসসি) পরীক্ষায় পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে যশোর বোর্ড। আর সর্বনিম্ন পাসের হার সিলেট

বিখ্যাত ৪ নেতার স্মৃতিধন্য যে মসজিদ

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১

ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ। জনমুখে খ্যাতির শীর্ষে থাকা মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানা সদরের ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ। ১০৩ বছরের পুরোনো ২৮ হাজার ৪০৫ বর্গফুটের এ বিশাল মসজিদে নামাজ পড়তে এবং এর ভেতরের নকশা ও ১২৮ ফুটের সুউচ্চ মিনার দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় লেগেই থাকে। ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদে নামাজ পড়েছিলেন- শেরে বাংলা, সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু, ভাসানীসহ অনেক বরেণ্য আউলিয়ারাও।

দৃষ্টিনন্দন ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ। কুমিল্লাহ-চাঁদপুর মহাসড়ক সংলগ্ন হাজীগঞ্জ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে ১৯১৮ সালে নির্মিত মসজিদটির স্থাপনাশৈলী এখনও মানুষকে বিমোহিত করে চলেছে। ১৩২৫ বাংলা সনে হাজিগঞ্জের স্থানীয় হাজি আহমাদ আলী পাটোয়ারি মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করে বিপুর পরিমাণ সম্পত্তি ওয়াকফ্ করেন।

মসজিদ নির্মাণের আগে প্রতিষ্ঠা ও মোতাওয়াল্লি হাজী আহমাদ আলী পাটোয়ারী নিজেই এ স্থাপনার পুরো নকশাটা তৈরি করেন। তার নিজস্ব চিন্তার ফসলে সহযোগিতা করেছিলেন তৎকালীন শিল্পী আব্দুর রহমান ওস্তাগার। মসজিদ নির্মাণকাজে কোনও প্রকৌশলীর পরামর্শ নেননি মোতাওয়াল্লি হাজি আহমাদ আলী পাটোয়ারী।

বর্তমানে হাজি আহমাদ আলী পাটোয়ারীর ওয়াকফ্ সম্পত্তিতে গড়ে ওঠেছে হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ কমপ্লেক্স। মসজিদ পরিচালনায় সভাপতি- উপজেলা নির্বাহী কর্মর্তাসহ আছেন ৯ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ বড় মসজিদে জুমআর নামাজের আজান ও ইকামতের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীসহ চারজন মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ মসজিদে নামাজ পড়েছেন। এছাড়াও জাতীয় নেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীসহ আরও অনেকেই এ মসজিদে নামাজ পড়েছিলেন।

মসজিদ সম্পর্কে জানা যায়, ১১৭৫ থেকে ১২০০ বাংলা সালে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আরবদেশ থেকে হাজী মকিমউদ্দিন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নামে একজন বুজুর্গ হাজীগঞ্জে আসেন। বর্তমান বড় মসজিদের মেহরাবসংলগ্ন উঁচু ভূমিতে স্থানে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। হাজী মকিমউদ্দিন ছিলেন স্থানীয়দের কাছে শ্রদ্ধাভাজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব।

হাজি মকিমউদ্দিন রাহমাতুল্লাহি আলাইহির বংশধর হাজি মনিরুদ্দিন ওরফে মনাই হাজি’র নাতি ছিলেন মোতাওয়াল্লী আহমাদ আলী পাটওয়ারী। তিনি ১৩২৫ থেকে ১৩৩০ বাংলা সালের দিকে হাজি মকিমউদ্দিন রাহমাতুল্লাহির বসতি বর্তমান মেহরাবের পাশে প্রথমে একচালা খড়ের ইবাদতখানা তৈরি করেন। তারপর খড় ও গোলপাতা দিয়ে তৈরি করেন দোচালা মসজিদ।

পাকা মসজিদের ভিত্তিস্থাপন
১৩৩৭ বাংলা সালের ১৭ আশ্বিন হাজী আহমাদ আলী পাটোয়ারীর ইচ্ছা ও চেষ্টায় হজরত মাওলানা আবুল ফারাহ জৈনপুরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি পাকা মসজিদের ভিত্তিস্থাপন করেন।

ঐতিহাসিক এ মসজিদটি ৩ ভাগে নির্মিত হয়। মেহরাবসহ মসজিদের প্রথম অংশটি ৪ হাজার ৭৮৪ বর্গফুট। মাঝের অংশটি ১৩ হাজার ৬ বর্গফুট। আর বারান্দা বা সুউচ্চ মিনারসহ তৃতীয় অংশটি ১ হাজার ৬১৫ বর্গফুট। ১৯ হাজার ৪০৫ বর্গফুটের মসজিদসহ সর্বমোট আয়তন ২৮ হাজার ৪০৫ বর্গফুট।

মসজিদের অলংকরণ ও অবকাঠামো
শুরুতে ঐতিহাসিক এ মসজিদের ভেতরের প্রথম অংশের মেহরাবসংলগ্ন দেওয়ালে হজরত মাওলানা আবুল ফারাহ জৈনপুরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি চুন-সুরকি কেটে কারুকাজের মাঝে সুরা ইয়াসিন ও সুরা জুমআ নিজ হাতে লেখেন বলেও জানা যায়। পরবর্তীতে মসজিদটি সংস্কারের সময় সেগুলো উঠিয়ে ফেলা হয়।
সে সময় মেহরাব তৈরিতে কাচের ঝাড়ের টুকরো নিখুঁতভাবে কেটে মনোরম ফুলের ঝাড়ের নকশা করা হয়েছিল। মসজিদের মাঝের অংশটি রয়েছে আকর্ষণীয় ৭৭টি পিলার। ঝিনুকের মোজাইক দিয়ে ফ্লোর নির্মিত। মসজিদের পূর্ব পাশের তৃতীয় অংশে রয়েছে তিনটি বিশাল গম্বুজসহ সুউচ্চ মিনার।

মসজিদে মিনার ও গম্বুজ
১৯৫৩ সালে এ মসজিদের সুউচ্চ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। ১২৮ ফুট উচ্চতার মিনারটি দেখতেও সুন্দর ও নিখুঁত। এর চুড়ায় ওঠাতে মিনারের ভেতরে তৈরি করা হয় সিঁড়ি। সব বয়সের সক্ষম মানুষ যা বেয়ে উপরে ওঠে পুরো থানার দৃশ্য দেখে আবেগে আপ্লুত হয়।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..