ফরিদপুরের মধুখালীতে ১৮ এপ্রিল উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে মন্দীরে কালী প্রতিমার শাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ তুলে আপন দুইভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় মধুখালী রেলগেট এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মানববন্ধন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরবর্তীতে তা বিক্ষোভ মিছিলে পরিণত হয়। মিছিলটি ঘটনাস্থল উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে মিছিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ৫শতাধিক লোক ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে অগ্রসর হলে পৌরসভার পশ্চিম গোন্দারদিয়া মালেকা চক্ষু হাসপাতাল এলাকায় পুলিশ তাদের গতীরোধ করে। এসময় অবরোধকারীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে মহাসড়কের নওপাড়া মোড়, আড়কান্দি সেতু, বাগাট এবং ঘোপঘাট ক্লাব এলাকায় জড় হয়ে যানচলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে। এসময় ঘোপঘাট এলাকায় উত্তেজিত অবরোধকারীরা কর্বব্যরত পুলিশের উপর হামলা চালালে জানমাল রক্ষার্থে পুলিশও রাবার বুলেট ছুড়লে ৩জন আহত হয়। অপর একজন ইটের আঘাতে মারাত্মক আহত হন। আহতদের মধুখালী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ৩জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও গুরুত্বর আহত ব্যক্তিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এসময় অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। তাদের নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আঘাত প্রাপ্ত হন। অবরোধের ফলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে প্রায় ৪ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিলো।গরমে অতিষ্ঠ ও দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় যাত্রী দুর্ভোগ চরণে ওঠে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এবং অবরোধকারীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিতে মালেকা চক্ষু হাসপাতাল এলাকায় পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। মানববন্ধন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরবর্তী সমস্ত জামায়াত পন্থীদের নেতৃত্বে চলে যায়। এসময় ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। তীব্র গরমে বাসে থাকা বয়স্ক ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঢাকাগামী বাসের যাত্রী মোঃ নূরে আলম জানান আজ সন্ধ্যায় তার ফ্লাইট, জীবিকার তাগিদে তাকে যেভাবেই হোক ঢাকায় পৌঁছাতে হবে কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তিনি চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। দুপুর একটার দিকে মালেকা চক্ষু হাসপাতাল এলাকায় অবরোধকারীদের মাঝে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো.কামরুল আহসান তালুকদার তাদের সমস্ত দাবী দাওয়া মেনে নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিস্পত্তির আশ্বাস দিলেও অবরোধকারীরা তাদের অবস্থানে অনড় থাকেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামনুন আহমেদ অনিকসহ প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। দুপুরের পর অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় বিভিন্ন জায়গা থেকে মধুখালীতে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে জানতে সিনিয়র এএসপি, মধুখালী সার্কেল, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মধুখালী থানা,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।