আজ ৫ নভেম্বর সোমবার চট্টগ্রাম দোহাজারী থেকে ছেড়ে আসা কক্সবাজার গামী ট্রেন দেখতে হাজার মানুষ ভিড় করেছেন ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ রেল স্টেশনে। এই ভীড় শুধুমাত্র একটি যানকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। যে অভ্যর্থনার জন্য কক্সবাজার জেলার মানুষকে অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ ৯২ বছর। ব্রিটিশ, পাকিস্তানসহ কত শাসকগোষ্ঠী এলো-গেল এরপর স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে আওয়ামী লীগ শাসনামলে ট্রেনে চড়ার স্বাদ পেতে যাচ্ছে দেশের সর্বদক্ষিণ অঞ্চল কক্সবাজারের মানুষ।
দুপুর ১টা থেকে ইসলামাবাদ রেলস্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান এক দর্শনার্থী সংগ্রাম প্রতিদিনের প্রতিবেদককে বলেন, “কক্সবাজারে ট্রেন এসেছে এটা আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে । অবশেষে আমরা এখন ট্রেনে করে দেশের সর্বত্র যাতায়াত করতে পারব । আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের আকাশপথে বিমানে করে যাতায়ার করার মত সামর্থ্য নেই, বাসেও ভাড়া বেশি। এখন ট্রেনে করেই আমরা খুব সহজে স্বল্প খরচে যাতায়াত করতে পারব।”
ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ বোয়ালখালীর আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ” মানুষের এত এত উৎসুক উপস্থিতি দেখেই তো বুঝতে পারছেন আমার অনুভূতি। বঙ্গবন্ধু কন্যার শাসনামলেই রেল যুগে পা দিতে যাচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ও কক্সবাজারের মানুষ। এতে আমরা সাধারণ নাগরিক তার কাছে কৃতজ্ঞ “।
ট্রেন দেখতে আসা হাজার হাজার উৎসুক দর্শনার্থীদের চাপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে ব্যাপক বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে রেলপথ পরিদর্শন অধিদফতরের
পরিদর্শক রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে রেলওয়ের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা- প্রকৌশলীসহ ৩ হাজার ইঞ্জিনের ১ টি লকোবেটর এবং ৮ টি বগি সংযুক্ত একটি ট্রেন সকাল আটটায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। মূলত এই ট্রেনটি আসে রেলপথ যাচাই-বাছাই করতে। এটি কোনো ট্রায়াল ট্রেন নয়।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী- রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই ভাগে কাজটি করেছে । এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।