হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর খবরে নীলফামারী ডিমলা উপজেলায় পেট্রোল পাম্পগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লেগে যায়।
গত শুক্রবার (৫ই আগস্ট) রাত ১০ টার পর থেকে পেট্রোল পাম্পগুলোতে মোটরসাইকেল, ট্রাক, ট্রাক্টর এবং মাইক্রোবাসের উপচে পড়া ভিড় তৈরি হতে শুরু করে। সবচেয়ে বেশি ভিড় করেন মোটরসাইকেলের চালকগণ।
শুক্রবার রাত ৯ টার কিছু পর দেশে ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা, অকটেনের দাম লিটারে ৪৬ টাকা এবং পেট্রোলের দাম লিটারে ৪৪ টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় সরকার। শুক্রবার রাত ১২ টার পর থেকে নতুন এদাম কার্যকর হওয়ার কথা জানানো হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসার পর বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে পেট্রোল পাম্পে ছুটতে শুরু করেন অনেকে।
তবে রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেল দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে পাম্পগুলোতে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। তৈরি হয় যানজট আর ভোগান্তিতে পড়েন নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষজন। এছাড়াও জ্বালানি তেল ছাড়াই ফিরতে হয়েছে অনেককেই।
তাদের একজন হযরত আলী। তিনি উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের (ডালিয়া) তিস্তা ফিলিং স্টেশনে গিয়ে অকটেন ছাড়াই ফিরেছেন। মোটরসাইকেল চালক হযরত আলী এই প্রতিবেদককে বলেন, দাম বাড়ানোর খবর জানতাম না। তেল ফুরিয়ে আসায় এমনিতেই কিনতে গিয়েছিলাম। দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও তেল না নিয়ে ফিরতে হয়েছে আমাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডিমলা সদর ইউনিয়নের আলম ফিলিং স্টেশন, খালিশা চাপানী ইউনিয়নের তিস্তা ফিলিং স্টেশন, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের সিয়াম ফিলিং স্টেশনে রাত ১০ টায় দেখা যায়, তেলের জন্য সহস্রাধিক যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। তবে পাম্পের কর্মীরা তেল বিক্রি করছেন না, এমনকি তাদের দেখাও পাওয়া যায়নি। উত্তেজিত হয়ে মোটরসাইকেল চালকেরা পাম্পের ম্যানেজারকে তার রুম থেকে বের করে নিয়ে এলে তিনি বলেন, ”মালিক নিষেধ করেছেন” তাই তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছি।
খবর পেয়ে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে রাত ১১টার পর তেল দিতে বাধ্য হন ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজারগণ। তবে, দীর্ঘ লাইন দেখে অনেককে তেল না নিয়ে চলে যেতেও দেখা গেছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ডিমলা থানা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ওঠা-নামার মধ্যে রয়েছে। তাই দেশে তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের চিন্তা করছে সরকার।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বেড়ে যায়। যার সার্বিক প্রভাব পড়ে গোটা বিশ্বে। ক্রমবর্ধমান দামে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয় দেশে দেশে।