সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবৈধভাবে ভারতীয় পণ্য প্রবেশের এক গোপন ও বিপজ্জনক বাস্তবতা।
সরকার যেখানে রাজস্ব হারাচ্ছে, সেখানেই গড়ে উঠছে একটি অবৈধ অর্থনীতির বলয়।দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার প্রতিনিধি সরেজমিনে খোঁজ নিয়েছেন, সীমান্তবর্তী মহিষখলা বাজার,মধ্যনগর, নদীপথ, সনুই এবং গাছতলা রোড়সহ যেখানে রাতের অন্ধকারে বদল হয় মাল, এক নৌকা থেকে আরেক নৌকা, এক গাড়ি থেকে আরেক গাড়ি বদল হয়, গড়ে ওঠে লাভের পাহাড়, আর প্রশাসনে চোখের আড়ালেই কি হয় এসব কাজ।
সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্ত উপজেলা মধ্যনগর চারপাশে নদী, হাওর আর সীমান্তঘেঁষা গ্রাম। এই ভূপ্রকৃতি যেন এক অদৃশ্য ছায়া হয়ে উঠেছে অবৈধ ভারতীয় পণ্যের জন্য নিরাপদ প্রবেশদ্বার।
প্রতিদিন রাতে মহিষখলা বাজার,মধ্যনগর নদীপথ, সনুই রোড, গাছতলা রোড হয়ে প্রবেশ করে ভারতে তৈরি অবৈধ পণ্য—চা, সুপারি, শাড়ি, কসমেটিকসহ, ওষুধ, কয়লা,গরু, আবার কখনও ইলেকট্রনিকস পণ্য।
স্থানীয় একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোকানদার বলেন,সবসময়ই রাত ৩টার দিকে নৌকা বা ট্রলারে মাল আসে, এখানে কিছু লোক থাকে যাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। তারপর স্থানীয় বাজারে ঢুকে পড়ে। প্রশাসন জানে, কিন্তু কিছু বলে না।”
প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা বিষয়টি “তদন্তাধীন বলে দায় এড়িয়ে যান। বিজিবির টহল সীমিত, কাস্টমসের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অথচ এই পথ দিয়েই প্রতিদিন কোটি টাকার পণ্য প্রবেশ করছে।
আরো অনেকে বলছেন, এভাবে পণ্য প্রবেশের কারণে সরকার প্রতি বছর প্রায় ৫০-১০০ কোটি টাকার শুল্ক হারাচ্ছে শুধু মধ্যনগর ও আশেপাশের অঞ্চল থেকেই। বৈধ পথে আসলে এই পণ্যের ওপর সরকার ভ্যাট, কাস্টমস ও কর আদায় করতে পারত।
আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, এসব পণ্যের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে নকল ও নিষিদ্ধ পণ্য, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান: চোরাকারবারিরা এখন এতই সাহসী হয়ে গেছে যে, দিনের আলোতেও ছোট ছোট মাল বহন করছে। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় তারা চলছে। না হলে এত অবাধ চলাচল সম্ভব না।
মধ্যনগর থানার ওসি মনিবুর রহমান বলেন, আমাদের কটুর ভাবে নজরদারি আছে, আমরা কোন চুরাচালানের খবর পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে