দেবীদ্বারে নাজমুল হাসান নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার সকালে উপজেলার মোহনপুর পূর্বপাড়া সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ সহিদুল ইসলামের বাড়ির সামনের সড়ক থেকে ওই লাশ উদ্ধার হয়। নিহত নাজমুল হাসান(২৫) উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র। সে হাড়িখোলা জুট মিলের শ্রমিক ছিল।
সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) নুরুল ইসলাম একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশের ছোরতহাল তৈরী পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। ওই ঘটনায় দেবীদ্বার থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মামলা নং-৫৬, তারিখ- ১৯/০৯/২০২২ইং। পুলিশ দুই প্যাকেট সেডিল ট্যাবলেট, একটি কাচি, একটি রেজার, কিছু পাতার বিড়ি, একটি মোবাইল সেট, একটি হাত ব্যাগসহ আরো কিছু সামগ্রী আলামত হিসেবে জব্ধ তালিকায় এনেছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক নিকট আত্মীয় জানান, নাজমুল জুট মিলের শ্রমিক থাকা অবস্থায় সঙ্গদোষে নেশার জগতে পা বাড়ায়। অভাবে থাকা নাজমুল নেশার ঘোরে প্রশান্তি খুঁজতে যেয়ে (ইয়াবা, গাঁজা) অতিরিক্ত নেশাতেই তার প্রাণ গেল। চিকিৎসক তাকে ঘুমের ঔষধ সেডিল ট্যাবলেট দিয়েছিল, সেই সেডিল ট্যাবলেটকেও নেশা হিসেবে অত্যধিক সেবন করতে থাকে।
নাজমুল ঢাকা- চট্রগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন দেবীদ্বার উপজেলার হাড়িখোলা জুটমিল গেইট সংলগ্নে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী মানসুরা বেগম(২২) ও দুই বছর বয়সী কণ্যা সন্তান মিম আক্তারকে নিয়ে বসবাস করতেন।
নিহতের বড় ভাই সোহাগ মিয়া জানান, তার ভাইয়ের মানষিক সমস্যা ছিল। প্রায়ই নিরুদ্দেশ থাকত। হাড়িখোলা জুট মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নাজমুল চট্রগ্রাম কালুরঘাট কর্নফুলি জুট মিলে চাকরি নেয়। সে ৫/৬দিন পূর্বে উপজেলার রাজামেহার গ্রামে খালার বাড়িতে আসে। গতকাল বিকেলে খালার বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়, আজ তার মরদেহ খুঁজে পাই। চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে সেডিল টেবলেট দেয়া হয়। সেডিল টেবলেট অতিরিক্ত সেবনের পর তার মৃত্যু হয় বলে ধারনা করছি।
তার স্ত্রী মানসুরা বেগম জানান, তার সাথে দেখা নেই অনেক দিন। আজ সকালে মোহনপুর গ্রামে এসে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই। আমি দু’বছরের শিশু কণ্যাকে নিয়ে কি করব, কি খাব, কিভাবে বাঁচব, সন্তানকে কিভাবে মানুষ করব কোন কিছুই ভেবে পাচ্ছিনা।
মোহনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ সহিদুল ইসলাম বলেন, রোববার দিবাগত রাত দেড়টায় আমার বাড়ির সামনের সড়কে একজন যুবক পড়ে কাতরাচ্ছে বলে জানতে পারি। স্থানীয়রা তার সাথে থাকা মোবাইল থেকে ফোন করে পরিবারে খবর দেয়। বাড়ির লোকজন আসবে বলায় স্থানীয়রা তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। রাজ যত গভীর হয় লোকজন যার যার ঘর চলে যায়। আমিও অসুস্থ্য থাকায় বের হইনি। ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে যেয়ে তার মরদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তার পরিবার ও পুলিশকে খবর দেই। অতিরিক্ত নেশা করার কারনেই তার মৃত্যু হতে পারে।
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি সার্বিক) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, নিহতের শরিরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিলনা। পরিবারের পক্ষ থেকে জানতে পারি সে মানষিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে দেয় সেডিল ট্যাবলেট অতিরিক্ত সেবনেই তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের নিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর কারন বলা যাবে।