বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন , ই-পেপার
শিরোনামঃ
পুলিশের ২৫২ এসআই অব্যাহতি.. স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমন গ্রেফতার শরণখোলায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য রেলি ও আলোচনা সভা বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা পেল সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল জামায়াত নেতার দাড়ি ছিড়ে নিয়েছে ছাত্রদল; প্রতিবাদে বিক্ষোভ  কামাল আহমেদ মজুমদারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শরণখোলা ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশ। ভালুকায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শান্তিগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয় দখলের অপচেষ্টার অভিযোগ মেয়র আতিকুল ইসলামকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত ১৬ বছরে দেশের যা ক্ষতি হয়েছে তা ঠিক করতে অন্তত ১০ বছর সময় লাগবে-উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সরকারি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করা, হাসপাতালের চেয়ে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী নিয়ে ব্যস্ত থাকাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত দুদক বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজ কুমার সাহার নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি দল এই অভিযান চালায়। অভিযানে অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছে দুদক।

জানা গেছে, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন বাবলু এবং অমিতাভ সরকার সরকারি দায়িত্ব পালন না করে ব্যক্তিগত চেম্বারে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ রোগী দেখেন।

এমনকি সরকার নির্ধারিত সকাল ৮টার অফিসেও তারা আসেন না। শুধু এই দুই চিকিৎসক নন, অন্যান্য চিকিৎসকরা একইভাবে দায়িত্বে অবহেলা করেন বলে ভুক্তভোগীরা দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেন।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকাল সোয়া ৯টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিনের কক্ষে গেলে তাকে পায়নি দুদক টিম। এমনকি অফিসের একজন পিয়নও উপস্থিত ছিলেন না। দুদকের টিম আসার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে কার্যালয়ে আসেন কলেজ অধ্যক্ষ।

দুদুক টিম কলেজ অধ্যক্ষের কাছে চিকিৎসকদের এক সপ্তাহের বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা দেখতে চান। তা দিতে অস্বীকার করেন কলেজ অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহিন। এ নিয়ে দুদকের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অভিযানকারী টিমের ছবি তুলে রাখার হুমকি দিচ্ছেন মনিরুজ্জামান শাহিন। তিনি কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় দুদক টিম তাদের পরিচয় দিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলে নিজেদের অভিহিত করেন। তখন কলেজ অধ্যক্ষ পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আপনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা? আর আমি (অধ্যক্ষ) কি ওড়ে এসেছি নাকি!

এর কিছুক্ষণ পর কলেজের অন্যান্য চিকিৎসক আসতে শুরু করেন। সোয়া ১০টার দিকে চিকিৎসকরা এসে অধ্যক্ষের কক্ষে বায়োমেট্রিক হাজিরা দিতে শুরু করেন।

দুদক টিম চলে যাওয়ার পর কলেজ অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন গণমাধ্যমকে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের টিম আমার কক্ষে এসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। তারা আমাকে তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা বলে অভিহিত করেন। আমার কক্ষে ঢুকে যে আচরণ করেছেন, তা তারা করতে পারেন না।

আমি জানতে পেরেছি, তাদের কেউ একজন ডাক্তার দেখাতে গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন। এজন্য তারা এসেছেন চিকিৎসকরা কখন আসেন তা দেখার জন্য। দুদক টিম আমার কাছে বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা চান। আমি স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের (ডিজি) সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি বলেছেন, দুদক টিম যদি আগে থেকে ঘোষণা না দিয়ে আসেন, তাহলে সে হঠাৎ করে এসে কাগজ চাইতে পারে না। এগুলো দেইনি দেখে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন।

তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের সাধারণ সম্পাদক। এ বিষয়ে চিকিৎসকদের অবহিত করেছি এবং আমার সংগঠন নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেব।

মনিরুজ্জামান শাহিন চিকিৎসকদের দেরিতে অফিসের আসার বিষয় স্বীকার করে বলেন, তা ঠিক আছে। আবার অনেক সময় চিকিৎসকরা দেরিতে এসে দায়িত্ব পালন করে পাঁচটার সময়ও যান। তা কিন্তু কেউ বলেন না। তবে ডাক্তাররা বেশি দেরিতে আসলে তা কেউ মেনে নেবে না।

সরকারি দায়িত্ব অবহেলা করে ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসকরা সময় দেন বেশি অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, সরকার থেকে ব্যক্তিগত চেম্বার করা যাবে না এমন কোনো নির্দেশনা আছে বলে জানা নেই। যদি থাকে তাহলে চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত চেম্বার করবেন না। তাছাড়া কতজন রোগী দেখতে পারবেন সে বিষয়েও কোনো নির্দেশনা নেই।

অভিযানের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক দেবব্রত মন্ডল। তিনি বলেন, অভিযান সর্ম্পকে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় থেকে বিস্তারিত জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সরকারি হাসপাতালে রোগী না দেখা, ইন্টার্নশিপে নিযুক্ত শিক্ষার্থীদের দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া, ডায়াগনস্টিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..