রাজধানীর শাহজাহানপুরে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যার সঙ্গে জড়িত মাস্টারমাইন্ডসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
শনিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, ওমর ফারুক (৫২), আবু সালেহ শিকদার (৩৮), নাছির উদ্দিন (৩৮) ও মোরশেদুল আলম (৫১) কে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, ২০১৩ সালে রাজধানীর গুলশান শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে মিল্কী হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। গ্রেপ্তাররা মিল্কীর সহযোগী ছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে টিপু জড়িত ছিলেন বলে গ্রেপ্তাররা সন্দেহ করতেন। তখন মিল্কী হত্যায় যে মামলা দায়ের করা হয়েছিল সেখানে এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন টিপু। কিন্তু বিচারিক কার্যক্রমে তার (টিপু) নাম বাদ পড়ে। যা গ্রেপ্তারদের মনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
র্যাব আরও জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিম ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বিরোধ ছিল। মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়েও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছিল। আর এসব দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই টিপুকে হত্যা করা হয়।
শনিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, টিপুকে হত্যার জন্য ১৫ লাখ টাকা বাজেট করেন পরিকল্পনাকারীরা। আন্ডার ওয়ার্ল্ড ডন মুসার ওপর দায়িত্ব আসে টিপুকে হত্যার। ঘটনার ১২ দিন আগে মুসা দুবাই চলে যান। সেখানে বসে তিনি কিলার নিয়োগ করা থেকে শুরু করে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৪ মার্চ রাতে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু মাইক্রোবাসে বাসায় ফেরার পথে শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা তাঁকে লক্ষ্য করে ১১টি গুলি ছোড়ে। এতে টিপু ও তাঁর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া যানজটে আটকে পড়া রিকশারোহী কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন।। পরে তিনজনকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক টিপু ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ২৫ মার্চ নিহত টিপুর স্ত্রী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে রাজধানীর শাজাহানপুর থানায় একটি মামলা করেন।
তবে মামলায় অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এর পরদিন ২৬ মার্চ রাতে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মূল শুটার মাসুম ওরফে আকাশকে বগুড়া থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর গতকাল শুক্রবার এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীসহ আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ছাড়া এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে শাহজাহানপুরের স্থানীয় যুবলীগ নেতা আরফান উল্লাহ দামালকেও গতকাল গ্রেপ্তারের কথা জানায় গোয়েন্দা পুলিশ