নানা অব্যবস্থাপনায় চলছে নেত্রকোণার রেলস্টেশনগুলো। কোন স্টেশনে নেই মাস্টার, কোনটিতে নেই বুকিং সহকারী, আবার কোনটিতে একেবারে ট্রেন থামেই না। ফলে জরাজীর্ণ অবস্থাসহ কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় একেবারে বন্ধ রয়েছে ৫টি স্টেশন। কিছু স্টেশনে গণ শৌচাগার পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। লোকবল সঙ্কটে একের পর এক বন্ধ হলেও সমাধানে রেলের নেই কোন উদ্যোগ। উর্ধতনদের জানাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান দুই স্টেশনের মাস্টার।
নেত্রকোণা জেলা গঠন হওয়ার আগেই ব্রিটিশ আমলে কৃষি পরিবহনসহ নিরাপদ চলাচলের জন্য একদিকে ভাটি অঞ্চল মোহনগঞ্জ পর্যন্ত ও অন্যদিকে জারিয়া পর্যন্ত নির্মাণ হয়েছিল রেলস্টেশনগুলো। এর মধ্যে নেত্রকোণার অংশে ১৩টি স্টেশন পড়েছে। জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে চারটি উপজেলার ভেতর দিয়ে দুই দিকে এই রেল লাইন। ফলে ২১২ কিলোমিটার রেল লাইনের আওতায় মোট ১৩টি স্টেশন রয়েছে। যেগুলোর অনেকগুলোতেই মাস্টার এবং বুকিং সহকারী নেই দীর্ঘদিন ধরে। কোন কোন স্টেশনে থামে না ট্রেনও। একেবারে ট্রেন না থামা চারটি স্টেশন হলো মোহনগঞ্জ রুটে বাংলা ও অতিতপুর স্টেশন এবং পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ ময়মনসিংহ রুটে চল্লিশা ও হিরনপুর। এদিকে জুলাই আন্দোলনের পর থেকে ময়মনসিংহ মোহনগঞ্জগামী লোকাল ট্রেনটিও বন্ধ রয়েছে অজানা কারণে।
এছাড়া পূর্বধলা স্টেশনে মাস্টার না থাকায় শ্যামগঞ্জ থেকে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে স্টেশন মাস্টারকে। অন্যদিকে ঠাকুরাকোনা স্টেশনে ট্রেন থামলেও নেই মাস্টার। এছাড়াও বাকীগুলোতে নেই বুকিং সহকারী। যার ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীরা।
এদিকে স্টেশনগুলোতে পাবলিক টয়লেট থাকলেও রয়েছে পরিত্যক্ত। ফলে যাত্রী সাধারণ ওঠা নামা করলেও শৌচাগারের অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। এছাড়াও জরাজীর্ণ অবস্থায় সবগুলোই।
চল্লিশা এলাকার রহমত উল্লা জানান, চল্লিশা এলাকায় একটি স্টেশন থাকলেও এখানে থামে না কোন ট্রেন। এই স্টেশন দিয়ে দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করলেও তাদের এই ট্রেনে যাওয়ার জন্য উঠতে হয় নেত্রকোণা সদর অথবা শ্যামগঞ্জ গিয়ে।
ঠিক এমন দশা শ্যামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ রোডে বড় স্টেশন ও মোহনগঞ্জ বাদে সব স্টেশনের বাকি স্টেশনগুলো লোকাল ট্রেন থাকলে গত জুলাই আন্দোলনের পর থেকে সেই ট্রেনটিও বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে শ্যামগঞ্জ-জারিয়া রোডে একটি লোকাল চললেও কিছুদিন পর পর বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
তবে নেত্রকোণার বড় স্টেশনে স্টেশন মাস্টার আব্দুল আল মামুন সমস্যার কথা স্বীকার করে জানান, লোকবল সঙ্কট কেটে গেলে অনেক সমস্যাই কাটবে। তারা উর্ধতন বরাবর যোগাযোগ করছেন সমস্যা সমাধানের জন্য।
স্থানীয়দের দাবি, নেত্রকোণার সবগুলো স্টেশন চালু করে প্রতিটি স্টেশনে যাতে ট্রেন থামানো হয় সেই ব্যবস্থা করা হোক।