“নোয়াখালীর চরজব্বর থানাধীন পশ্চিম চরজুবলী এলাকায় সংঘটিত চর আমান উল্লাহ নিবাসী সুব্রত চন্দ্র দাস হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার মূল আসামীকে গ্রেফতার করেছে চরজব্বর থানা পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ দুপুর অনুমান ০১:৪৫ ঘটিকার সময় চরজব্বর থানাধীন ০৫নং চরজুবলী ইউনিয়নের পশ্চিম চরজুবলী এলাকায় জনৈক রাজ্জাক সওদাগরের ধানী জমির উত্তর পার্শ্বে পাকা রাস্তায় সুব্রত চন্দ্র দাস (৪৭), পিতা-চিরু রঞ্জন দাস, মাতা-প্রীতি রানী দাস এর রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় চরজব্বর থানায় মামলা নং- ০২, তারিখ-১৩/১০/২০২৫ ইং, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড মোতাবেক মামলা রুজু করা হয়।
মামলা রুজুর পর নোয়াখালী জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আব্দুল্লাহ-আল-ফারুক মহোদয়ের দিকনির্দেশনায়, জনাব মোহাম্মদ ইব্রাহিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস), নোয়াখালী এঁর প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে চরজব্বর থানা পুলিশের একাধিক টিম দ্রুত অভিযান শুরু করে। প্রাথমিক তদন্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্য এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের মূল আসামী হিসেবে নূর মোহাম্মদ (৫৭), পিতা-মৃত আলী আহম্মদ, মাতা-রূপোষা বেগম, সাং- মধ্যম বাগ্যা, ৪নং ওয়ার্ড, ০৫নং চরজুবলী ইউনিয়ন, থানা- চরজব্বর, জেলা-নোয়াখালী-কে শনাক্ত করা হয়।
পরবর্তীতে পুলিশের আভিযানিক দল গত ১৬ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিঃ রাত অনুমান ২৩:০৫ ঘটিকায় নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন ধর্মপুর ইউনিয়নের উত্তর ওয়াপদা বাজার এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করে। আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই রাতে পূর্ব শুল্ল্যুকিয়া এলাকার জনৈক জসিম ড্রাইভারের ঘর হতে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী নূর মোহাম্মদ স্বীকার করেন যে, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ দুপুরে নিজের মোটরসাইকেল যোগে ভাগিনা ফয়সাল (১০)-কে সঙ্গে নিয়ে গাছ কাটার শ্রমিকদের খাবার পৌঁছাতে যাওয়ার পথে ভিকটিম সুব্রত চন্দ্র দাস (৪৭) চর আমান উল্ল্যাহ তাহার স্ত্রী রিক্তা দাসকে আনার জন্য ভূইয়ার হাটে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে একটি সিএনজিকে ওভারটেক করার সময় সামনে থেকে আসা একটি দ্রুতগামী মোটর সাইকেল দেখতে পেয়ে হঠাৎ ব্রেক করার কারণে মোটরসাইকেল সহ সড়কে পড়ে যায়। এরপর দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা ভিকটিম সুব্রত চন্দ্র দাসের উপর দিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা উক্ত নূর মোহাম্মদের মোটরসাইকেলটি চলে যায়। নূর মোহাম্মদের মোটর সাইকেলের বাম্পার ও স্ট্যান্ডে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ভিকটিমের গলায় কেটে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। উল্লেখ্য যে উক্ত ঘটনায় আরো তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের কাছে একই রকম ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই বা প্রমাণ ছাড়াই ভিকটিম সুব্রত চন্দ্র দাস (৪৭), এর মৃত্যুর ঘটনাটিকে “প্রকাশ্য দিবালোকে জনসম্মুখে কুপিয়ে হত্যা” হিসেবে প্রচার করা হয়, যা তদন্তের স্বার্থে বিভ্রান্তিকর ও অনভিপ্রেত। মিডিয়ায় প্রকাশিত যেকোন ধরনের অপতথ্য সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং যার দরুন জনমণে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়।”