শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন , ই-পেপার

সাগরের মাছ ধরতে হলে চাঁদা দিতে হয় বিএনপি নেতাকে

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপলোডের সময় : শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের সাগর মোহনায় মাছ ধরতে হলে স্থানীয় বিএনপি নেতাকে চাঁদা দিতে হবে। নিখিল হাওলাদার নামে এক জেলে শনিবার সকালে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মুন্সির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন।

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলন থেকে নজরুলের দলবলের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির পাশাপাশি ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ করেন নিখিল। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাগর মোহনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি। সরকার পরিবর্তনের পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুলের লোকজন তার কাছ থেকে মাছ ধরার অনুমতির নামে প্রতি জোবায় (নির্ধারিত সময়ে) ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে তিনি ২০ হাজার টাকা দেন। একইভাবে নজরুল মুন্সি ১০ হাজার টাকা এবং তার খালু হাবিব হাওলাদার ১৪ হাজার টাকা নেন বলে সম্মেলনে দাবি করেন নিখিল।

এরপরের সময় ৪ এপ্রিল মাছ ধরার সময় আবারো ২০ হাজার টাকা দাবি করেন নজরুল। কিন্তু টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় নজরুলের লোকজন তার মাছ ধরার ট্রলার জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এদিকে পরদিন স্থানীয়দের কাছে তিনি বিষয়টি জানালে স্থানীয়রা তার বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে নিখিলের বাড়িতে গিয়ে তাকে ভয়ভীতি, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধরের হুমকি দেন। পরে তারা নিখিলকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করে ভিডিও ধারণ করে নিয়ে যায়। তিনি বিষয়টি পুলিশ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন।

বর্তমানে তিনি প্রাণনাশের আশঙ্কায় বাড়ি ফিরতে পারছেন না এবং তার পরিবারও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি প্রশাসনের নিকট তার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ন্যায়বিচার দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চরমোন্তোজ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদ প্যাদা, ইউপি সদস্য হাজী মো. মিজানুর রহমান গাজী, চরমোন্তাজ ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি মোশারেফ হোসেন, দীপরাজ মজুমদারসহ অন্যরা। তবে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করেছেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মুন্সি। তিনি বলেন, আসলে জেলে নিখিল সাগর মোহনায় অবৈধভাবে পোনা ধরে খুলনায় বিক্রি করে আসছেন। সেখানকার মহাজনদের দাদন নিয়ে জেলেদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। অবৈধ জাল করতে নিষেধ করায় এভাবে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।

রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো. এমারত হোসেন বলেন, জেলে নিখিল একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। দুপক্ষকে ডাকার পর নিখিল উপস্থিত হয়নি। এছাড়াও নিখিল বিষয়টি মীমাংসার কথা বলেন। রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান বলেন, জেলে নিখিলের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..