নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেস্টার অভিযোগে মামলার পর থেকে বর্তমানের টক অব দ্য টাউন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি। তবে এবার এই নায়িকার বিরুদ্ধে কর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ক্লাব কর্তৃপক্ষর অভিযোগ, পরীমনি তাদের ক্লাবের ১৫টি গ্লাস, নয়টি অ্যাসট্রে, বেশকিছু হাফ প্লেট ভাঙেন।
বুধবার রাতে অল কমিউনিটি ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ক্লাবটির সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল।
ক্লাবটির সভাপতি বলেন, গত ৮ জুন রাতে আমাদের ক্লাব বন্ধের সময় হয়ে এসেছিল। এমন সময় কয়েকজন লোক ক্লাবে আসেন। গেটে দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি গার্ডরা ফোন করে জানান, তারা কিছুক্ষণ আগে একবার এসেছিলেন। তখন তারা ফোন ও কিছু কাগজ রেখে গেছেন। সেগুলো নেয়ার জন্য আবার এসেছেন।
আলমগীর ইকবাল বলেন, প্রতিটি ক্লাবের কিছু নিয়ম কানুন আছে। আমাদের ক্লাবের নিজস্ব নিয়মকানুন আছে। আর মেয়েদের বিষয়েও আছে। কোনো মেয়ে যদি ক্লাবে আসে তাহলে তাকে কিছু ড্রেস কোড মেনে আসতে হয়। সেদিন এখানে যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন হাফপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরা। তখন আমাদের কর্মকর্তারা বলেন, আপনারা তো ক্লাবের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। তাদের ক্লাব থেকে এটা বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এই সময়ে তারা যে সদস্যদের মাধ্যমে ক্লাবে আসেন তিনিও তাদের চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা যেতে চাননি। পরে বাধ্য হয়ে আমাদের সেই সদস্য চলে যান। এর মধ্যে আমাদের ক্লাবের সব কর্মকর্তা চলে যান। শুধু দুজন ওয়েটার ছিল। এরই মধ্যে তারা ৯৯৯-এ কল করে পুলিশ ডাকেন। পুলিশ এলে তারা ক্লাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাদের হেনস্তার অভিযোগ করেন। কিন্তু বাস্তবে তখন আমাদের তেমন কেউ ছিল না।
ক্লাবটির সভাপতি আরও বলেন, রাত ১টার পরেই তার এসে ভাংচুর করে। প্রথমে তাদের চিনতে না পারলেও পর আমরা জানতে পারি তার নাম পরীমনি। পুলিশ এসেও ভাংচুর ও এর সত্যতা পায়। পরে পুলিশ ঘটনার বিষয়ে তাদের ঊর্ধ্বতনদের জানায়। তারা ওই পুলিশ সদস্যদের চলে যেতে বলেন। তবে এঘটনায় থানায় কোন মামলা করা হয়নি।
এই ঘটনায় থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে কি না? প্রশ্নের জবাবে আলমগীর ইকবাল বলেন, না। যারা এসেছেন, তারা ক্লাবের অতিথি। ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী কোনো অতিথির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় না। তবে ক্লাবের কোনো সদস্যের মাধ্যমে এসে কোনো অতিথি যদি বিশৃঙ্খলা করেন, তবে ওই সদস্যে বিরুদ্ধে নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
গুলশান থানায় এ ঘটনায় জিডি বা অভিযোগ করা হয়েছে কি না? জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলন, গুলশানের ক্লাবটিতে ভাংচুরের ঘটনায় থানায় কেউ কোনো অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করেনি। ওই রাতে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ থেকে থানায় কল আসে পরীমনির সঙ্গে ক্লাবটিতে কাদের কি ঝামেলা হচ্ছে। পরে সেখানে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পরীমননিসহ সবাই সেখান থেকে যার যার মতো চলে যায়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় নিয়ম অনুযায়ী যে কোনো ঘটনার বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করা হয়। এটা আমরাই করে থাকি। তবে ওই ক্লাবের পক্ষ থেকে কোনো জিডি করা হয়নি।