বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৪:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সিংড়ায় হজ্ব গমনে ইচ্ছুক হাজীদের সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ  কক্সবাজার জেলায় ১০ম বারের মতো শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারি অফিসার মহসিন ও শ্রেষ্ঠ অস্ত্র উদ্ধারকারী সোলায়মান লোহাগড়ায় নবগঙ্গা ডিগ্রী কলেজের দূর্নীতিবাজ সভাপতি রাশিদুল বাশার ডলারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মুন্সী নজরুল ইসলামের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  মিল্টন ব্লেড-ছুরি দিয়ে নিজেই অপারেশন করতেন, তথ্য জানালো ডিবি মধুখালিতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা বিএনপির দন্তত কমিটির বিচার দাবি লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ  লোহাগড়ায় বিএনপির উদ্যোগে সাধারণ মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি- স্যালাইন ও বিস্কুট বিতরণ চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি শিক্ষার্থীবান্ধব হবে কবে? ঈদগাঁও উপজেলার নির্বাচনে সুবিধাজনক স্থানে আবু তালেব, লড়ে যাবেন সেলিম আকবর এবং শামশু।

সিংড়ায় ১৪ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে কৃষক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

আমিনুল হক সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী কৃষক। কৃষি তাদের প্রধান পেশা একই সাথে দেশের ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষি উৎপাদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে পরিস্থিতি বিবেচনায় কৃষি উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করতে কৃষি উপকরণ যেমন, জ্বালানী তেল, বিদ্যুৎ, সার, বীজ, কীটনাশক স্বল্পমূল্যে রেশনিং-এর মাধ্যমে প্রকৃত কৃষকদের মধ্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করা, যাতে দেশের অর্থনীতি এবং খাদ্য নিরাপত্তায় কোন সংকট সৃষ্টি না হয় এমনটাই জানিয়েছেন জাতীয় কৃষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমেটির সহ-সভাপতি নূর আহমেদ বকুল। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কৃষক বাঁচাও – দেশ বাঁচাও শ্লোগানে ১৪ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে নাটোরের সিংড়ায় কৃষক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় উপজেলার অডিটোরিয়াম হলরুমে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সাবেক সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জিএ কলেজের সাবেক ভিপি মিজানুর রহমান মিজানের সভাপতিত্বে এসময়  বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কৃষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমেটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মিয়া। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষক নেতা সাদাকাত হোসেন খান বাবুল।
এসময় বক্তারা বলেন, পানির অভাবে কৃষক পাট পঁচানো নিয়ে গভীর সংকটে। সর্বত্র পানির অভাব সে কারণে পাট কাটা, পরিবহন, পঁচানো এবং ধৌতকরণে চলতি বছর পাটের মনপ্রতি উৎপাদন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪০০০/- টাকার উর্ধ্বে। অথচ বাজারে পাটের দাম প্রতিমণ প্রকারভেদে ১৫০০/- থেকে ২৫০০/- টাকা। অপরদিকে পাটকাটা দেরিতে হওয়ার কারণে ধান রোপন বিলম্বিত হয়, যার ফলে ভুক্তভোগী কৃষক পরিবারে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে। যার প্রভাব পড়বে সামগ্রীক খাদ্য নিরাপত্তায়। এছাড়া মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো কৃষক গরু নিয়ে পড়ছে মহাবিপদে। ঘরে ঘরে কৃষকের গরু অসুস্থ, আক্রাক্ত হচ্ছে ল্যাম্পিস্কিন ( চর্মরোগ), খুরারোগ, তর্কারোগ এবং জরারোগে। প্রতিকারে উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর নির্বিকার। ফলে মারা যাচ্ছে অনেক গরু, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গরুচাষী কৃষক পরিবার। অনেকে ব্যাপক ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে মাংস বিক্রেতার নিকট কমমূল্যে গরু বিক্রি করে দিচ্ছে। যারফলে সংক্রমিত হতে পারে মানব দেহ, দেখার কেউ নাই। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের নাভিশ্বাস উঠছে। এমতাবস্থায় চাল, ডাল, আটা, তেল, বিদ্যুৎ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য কমাতে হবে। একই সাথে ক্ষেতমজুর এবং শ্রমজীবি মানুষদের খাদ্য নিরাপত্তায় তাদেরকে তালিকাভূক্ত করে পূর্ণ রেশনিং- এর আওতার আনতে হবে। এছাড়া ভূমির খাজনা, নামজারি জমাভাগ (মিউটিশন) এবং জমি রেজিষ্ট্রির জন্য আছে সরকারি আইন। কিন্তু সরকারি আইন উপেক্ষা করে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কমচারী অবৈধ অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে নিরীহ ভূমি মালিকদের উপর নানাবিধ বে-আইনী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। ফলে অনিয়ম, অ-ব্যবস্থাপনা ও জনহয়রানি দূরীকরণে এখনই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কৃষক গণসমাবেশে ১৪ দফা দাবি সমূহ,,
১। পাটের মূল্য প্রতিমন ৫০০০ টাকা এবং ধান সহ সকল উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য দিতে হবে।
২। রোগাগ্রস্ত গরু চিকিৎসায় অনতিবিলম্বে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩। চলনবিলের মৎস্যচাষীদের পুরাতন পুকুর সংস্কারে অনুমতি সহ তৎসংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তা- কর্মচারীদের দূর্নীতি ও হয়রানী বন্ধ করতে হবে এবং মৎস্য চাষের জন্য সেচের পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত অগভীর নলকূপের বিদ্যুৎ সংযোগকে বাণিজ্যিক/শিল্প বিল না নিয়ে কৃষি বিল হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। মৎস্যজীবিদের সঠিক তালিকা করে, ভূয়া সমিতি গুলো বাতিল করে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি মাধ্যমে সিংড়ার খাস পুকুর ইজারা দেওয়া হোক।
৪। চাল, ডাল, তেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাও।
৫। অবিলম্বে সারাদেশের কৃষক, ক্ষেতমজুর ও গরীব শ্রমজীবি মানুষদের পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থা চালু কর।
৬। সার, বীজ, কীটনাশকের দাম কমাতে হবে।
৭। ডিজেল সহ সকল প্রকার জ্বালানী তেল ও বিদ্যুতের দাম কমাও। লোডশেডিং বন্ধ
কর, একই সাথে বিদ্যুতের ডিমান্ড চার্জ, সার্ভিস চার্জ ও মিটার ভাড়া বাতিল কর।
৮। কৃষি ফসল সংরক্ষণে প্রত্যেক ইউনিয়নে সংরক্ষণাগার (হিমাগার) নির্মাণ করে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সংরক্ষিত ফসলের বিনিময়ে আপদকালীন অর্থ প্রদান করতে হবে।
৯। ইজারাদারদের শোষণ বন্ধ করে হাট বাজারে কৃষি ফসল বিক্রয়ে অবৈধ ধলতা এবং অতিরিক্ত খাজনা আদায় বন্ধ করতে হবে।
 ১০। কৃষি জমির খাজনা সরকারি আদেশ (৩০ জুন ২০১৫) অনুযায়ী কার্যকরীকরতে হবে।
১১। পৌর এলাকার কৃষি জমির খাজনা (২৫ বিঘার নিচে) মওকুফ, এই আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
১২। উত্তরাধিকারপ্রাপ্ত এবং হস্তান্তরের ফলে জমির মালিকানা পরিবর্তন বিষয়ে মিউটিশন সরকারি বিধি মোতাবেক দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
১৩। কবলা দলিল, হেবা দলিল এবং পারিবারিক বন্টননামার দলিল রেজিষ্টিশনে সরকারি
আদেশ লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ করতে হবে।
১৪। চলনবিলের জীব বৈচিত্র্য রক্ষা কর এবং পরিবেশ বিপর্যয় প্রতিরোধে বৃক্ষ রোপন | কর্মসূচি জোরদার কর, পরিবেশ ও মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর সীসা উৎপাদন বন্ধ সহ বজ্রপাত বন্ধ কল্পে ব্যাপক হারে তালগাছ লাগানো কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখিত দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ তোলার আহবান জানান বক্তারা।
কৃষক গণসমাবেশে সিংড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের আপামর কৃষক ও সুধিজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..