কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ী আর আর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির(ক) শাখার শ্রেণি শিক্ষক স্বপন চন্দ্র সাহা,আজ ৩০ জুলাই সকাল অনুমানিক ১০:১০ মিনিটে শ্রেণি কক্ষ থাকা অবস্থায় মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নামে অন্য বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক স্বপন চন্দ্র সাহার কাছে হাজিরা খাতা চায়,পরে শিক্ষক স্বপন চন্দ্র সাহা প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া হাজিরা খাতা দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয়।
মেঃ জাহাঙ্গীর আলম আবারো স্কুলের দপ্তরী ১নং স্বাক্ষী সফিউল্লাহকে নিয়ে শিক্ষক স্বপন চন্দ্র সাহার কাছে হাজিরা খাতা চায় তিনি আবারো একই কথা বলেন,এতে জাহাঙ্গীর আলম ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
পরে শিক্ষক স্বপন চন্দ্র সাহা শ্রেণি কক্ষ থেকে বাহির হওয়ার সময় জাহাঙ্গীর আলম ঐ শিক্ষককে বিভিন্ন রকম গাল-মন্দ দিয়ে কিল-খুশি ও গলা চেপে ধরে, তাহার মার-ধরে শিক্ষক স্বপন চন্দ্র সাহার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল ফুলা জখম হয়।
পরে উপস্থিত কয়েকজনের মাধ্যমে হামলাকারী জাহাঙ্গীর আলমের হাত থেকে রক্ষা পায় শিক্ষক স্বপন চন্দ্র সাহা।পরে তাকে বরুড়া সরকারী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। যাহার রেজি নং-১৫১৪/২৪৩। হামলাকারী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার স্থান ত্যাগ করার সময় শিক্ষককে বলে যদি কোন প্রকার জামেলা করে, তাহলে শিক্ষক ও শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের রাস্তায় একা পেলে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। তাই শিক্ষক স্বপন চন্দ্র সাহা নিরুপায় হইয়া পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার আশায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গদের জানিয়ে থানায় আসিয়া অভিযোগ দায়ের করে।যার এস ডি আর নাম্বারঃ ১৭৩৭
এতে বাদীর স্বপন চন্দ্র সাহা সহকারী শিক্ষক (৫৭), পিতা মৃত কিশোরী মোহন সাহা, সাং- ভবগ্ৰাম, পোঃ আমড়াতলী, খানার বড়া, জেলাঃ কুমিল্লা।বিবাদীঃ জাহাগীর আলম মজুমদার (৫৩), পিতাঃ মৃত আবদুল লতিফ মজুমদার, সাং- বড়ইয়া, পোঃ শিলমুড়ী, থানাঃ বরুড়া, জেলাঃ কুমিল্লা। সাক্ষী, ১। সফিউল্লাহ (দপ্তরী), পিতাঃ মৃত আলী আকবর, সাং- চালতাতলী ২। হেলাল কবির (সহকারী শিক্ষক), পিতার।অজ্ঞাত, ২। নাজমুল হোসাইন (সহকারী শিক্ষক), পিতা: অজ্ঞাত, সর্ব থানাঃ বরুড়া, জেলাঃ কুমিল্লা।
এই ঘটনার পর পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জিয়াউল কাউসার আহমেদ, বরুড়া উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু ইউসুফ, শিলমুড়ি দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী সুমন আহমেদ, শাহ্ আলম সহ স্থানীয় লোকজন এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষকগণ ক্লাস বর্জন করে সাথে স্কুলের সকল ছাত্র ছাত্রী ক্লাস বর্জন করে পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ক্লাস শুরু করান এই ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে,
বরুড়ায় শিক্ষকের উপর অর্তকিত হামলায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে বর্তমান ছাত্র/ছাত্রী, সাবেক ছাত্র/ছাত্রী, স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন গুলো সবাই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান
এই বিষয়ে বরুড়া উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু ইউসুফ বলেন আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার চাই এই ধরনের ঘটনা বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানায় না এই ঘটনা কিন্তু স্কুলের কোমলমতি শিশুদের সামনে ঘটেছে যারা আগামীর ভবিষ্যৎ তারা তাহলে কি শিখলে…?? আজ একজন প্রধান শিক্ষকের কাছে যদি একজন সরকারি শিক্ষক নিরাপদ না হয় হোক তিনি অন্য প্রতিষ্ঠানে তিনি তো প্রধান শিক্ষক তাহলে তিনার স্কুলের অন্য শিক্ষকদের সাথে কি ধরনের আচরণ করেন তা তদন্ত করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি,
এই বিষয়ে বরুড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান শাহীন বলেন এইটা কেমন শিক্ষা যিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনিও একজন শিক্ষক আর অন্য একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক তিনি অবশ্যই জানেন কিছু রুলস থাকে নিয়ম থাকে তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে না বলে হঠাৎ করে এমন আচরণ তা মেনে নিতে পারছি এই বিষয়ে আইনগত সমাধান আশা করি ততটুকু জানি এই বিষয়ে থানায় সাধারণ ডাইরি হয়েছে আশা করি পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচারের আওতায় আনবে না হয়ে আগামী কাল সাবেক ও বর্তমান ছাত্র ছাত্রীদের অবস্থা ধর্মঘটের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন বলেন যখন এই ঘটনা ঘটে তখন আমি রুমে ছিলাম পরে ঘটনা শুনে সমাধানের চেষ্টা করি হঠাৎ করে এই ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যায় আমি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শুরু করে সকলকে অবগত করেছি ঘটনার পর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ আসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করেন,
উপজেলা শিক্ষা অফিসার বলেন এই বিষয়ে অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি তিনি মামলা দায়ের করেছেন আমি এই বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করে সঠিক তথ্য নিশ্চিত হয়ে ব্যবস্থা নিবে।