বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরবর্তী ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানে ৫ই আগষ্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন পরবর্তী রাষ্ট্রযন্ত্র কে দলীয় প্রভাব মুক্ত করতে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক এর বদলি পরবর্তী সময়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ বাগেরহাট জেলা প্রশাসক পদে যোগদান করেন, বিসিএস ২৫ তম ব্যাচের জনাব আহমেদ কামরুল হাসান। যোগদান পরবর্তী সময় আজই(২৬.০৯.২০২৪ইং) তার শরণখোলায় প্রথম শরণখোলায় আগমন ।
দিনব্যাপি সফরের শুরুতে আমড়াগাছিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ধানসাগর নলবুনিয়া(পহলানবাড়ি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ,শরণখোলা থানা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়,সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়, ৪ নং সাউথখালি ইউনিয়নের সোনাতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, একই ইউনিয়নের লাকুড়তলা কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেন, পরিদর্শনকালীন সময় তাদের বিভিন্ন সমস্যার সমূহের কথা তুলে ধরলে তা দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক মহোদয়। এছাড়াও শরণখোলায় নবনির্মিত আনসার ব্যারাক এর উদ্বোধন করেন তিনি।
আজ বিকাল ৩ টায় শরণখোলা মডেল মসজিদ মিলনায়তনে উপজেলার সকল দপ্তর প্রধানগণ ও প্রধান শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন নবনিযুক্ত বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মহোদয়।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব সুদীপ্ত কুমার সিংহ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন , সদ্য নিয়োগকৃত বাগেরহাট জেলা প্রশাসক জনাব আহমেদ কামরুল হাসান । কলেজ শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, শরণখোলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জনাব নুরুল আলম ফকির, মাদ্রাসা শিক্ষক প্রতিনীধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, রায়েন্দা রাজৈর সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জনাব আব্দুল জলিল আনোয়ারি ও খাদা গগন মেমোরিয়াল দাখিল মাদ্রাসার সুপার জনাব ওবায়দুল হক সেলিম। প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী নীতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেন ও শাহ জামান জুয়েল । এছাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিগন তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমূহের কথা তুলে ধরেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, শরণখোলা থানা অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ কামরুজ্জামান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ফিল্ড সুপারভাইজার জনাব মোঃ আব্দুল হাদী আকুঞ্জি।
কলেজ,মাধ্যমিক বিদ্যালয়,মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষকদের বিভিন্ন সমস্যার সমূহের কথা শুনেন এবং দপ্তর প্রধানকে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
দেশ ও জাতিকে আত্মনির্ভরশীল করতে হলে শিক্ষার গুণগতমান আরো উন্নত করার পরামর্শ দেন তিনি।
সেক্ষেত্রে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার বৃদ্ধি করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মোবাইলের নেশা থেকে মুক্ত করতে হবে , এজন্য শিক্ষক অভিভাবক সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়ন ছাড়া কোনো জাতির উন্নয়ন সম্ভব না। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করতে গেলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত রয়েছে। অভাব শুধু গুণগত বা মানসম্মত শিক্ষার। শিক্ষার মান বাড়বে শিক্ষকদের গুণে,শিক্ষার মান উন্নত করতে শিক্ষকের ভূমিকাই সর্বাধিক অগ্রগণ্য। অভিভাবকদের সচেতন করার দায়িত্বও শিক্ষকদের। শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের জন্য শিক্ষককে আন্তরিক হতে হবে। শিক্ষক দরদি মন নিয়ে শিক্ষা দিতে হবে। শিক্ষককেই সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে নিয়মিত ও যথাযথ পাঠদান ও শিক্ষাদানের কৌশল সক্ষমতা ও নৈপুণ্যের ওপর নির্ভর করবে শিক্ষার গুণগত মান ও মানসম্মত শিক্ষা। যেকোনো দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য মানসম্মত শিক্ষার বিকল্প নেই। শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের নিয়মিত, সুষ্ঠু, উন্নত ও পদ্ধতিগত পাঠদান প্রণিধানযোগ্য। শ্রেণিকক্ষে মানসম্মত আধুনিক সফল, যথাযথ ও নিয়মিত পাঠদান এবং শিক্ষাদান শিক্ষার্থীদের জন্য বড় পাওনা।
শিক্ষকতা পেশাকে রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একজন শিক্ষক, জাতি গড়ার কারিগর। সুস্থ দেশ গড়ার জন্য চাই একজন উপযুক্ত শিক্ষক, তাহলেই গড়ে উঠবে চরিত্রবান শিক্ষার্থী ও উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা।
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের পাঠদানের ক্ষেত্রে তাদের সদিচ্ছা, ইচ্ছাশক্তি ও আন্তরিকতাই শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক। একজন শিক্ষকের জীবনাদর্শ হবে দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য আলোকবর্তিকাস্বরূপ। শিক্ষকদের স্বশাসিত হতে হবে। তাড়িত হতে হবে বিবেক দ্বারা। শিক্ষার্থীদের আত্মোপলব্ধির প্রয়োজনে চমৎকার উদ্ভাবনী ক্ষমতা থাকবে হবে শিক্ষকদের তাহলেই উপযুক্ত যোগ্য শিক্ষার্থী গড়ে তোলার সম্ভব হবে।
বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরণখোলা উপজেলা সমন্বয়ক জনাব ইলিয়াস হোসেন আহত ছাত্রদের সহযোগিতা চেয়ে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় তার বক্তব্য আন্তরিকতার সাথে শুনেন এবং যথাযথ সহযোগিতা পাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..