বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪২ অপরাহ্ন , ই-পেপার
শিরোনামঃ
রাঙ্গাবালী’তে উপযুক্ত জায়গা না থাকায় ঐতিহ্য হারাচ্ছে শতবর্ষী হাট-বাজার ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করেছে সরকার। নামের আগে কারা ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবে, জানালেন হাইকোর্ট আইন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন সিনিয়র জেলা জজ বিকাশ কুমার সাহা আ. লীগকে আর রাজনীতিতে দেখতে চাই না: হাসনাত আব্দুল্লাহ নেত্রকোণায় পাহারাদারকে হত্যায় যুবদলের সদস্য সচিবসহ গ্রেপ্তার-৩ লোহাগড়ায় ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার ২ নেত্রকোণায় মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার, রয়েছে ১৮ মামলা ধর্মপাশায়, ২নং সেলবরষ ইউনিয়নের ৭১৭টি পরিবার ৫৪০ টাকা পাচ্ছে টিসিবির পণ্য রাঙ্গাবালীতে তিনটি গরুসহ চোর সদস্যের ২জন আটক

শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবিতে নারী দিবসে তরুণদের মানববন্ধন

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপলোডের সময় : শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছে তরুণ সমাজ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ৮ মার্চ সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নারী মৈত্রীর উদ্যোগে পরোক্ষ ধুমপানের ক্ষতি থেকে নারী, শিশু ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই দাবি জানান তারা। উক্ত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন তামাক বিরোধী তরুণ ফোরাম, মায়েদের ফোরাম, শিক্ষক ফোরাম, গার্লস গাইড রেঞ্জার এবং রেড ক্রিসেন্ট এর সদস্যসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এসময় বক্তারা বলেন, তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে এবং নতুন প্রজন্মকে আসক্ত করছে। তাই তামাকের ক্ষতির প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরও শক্তিশালী করা জরুরি।

তামাকবিরোধী ইয়ুথ ফোরামের আহ্বায়ক আশরাফিয়া জান্নাত বলেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন ৪৪২ জন তামাকজনিত কারণে প্রাণ হারান। এই মৃত্যু প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস ও কার্যকর করা জরুরি। প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—

১) সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা – যাতে অধূমপায়ীদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
২).বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা
৩).বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা
৪).তামাক কোম্পানির কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ন নিষিদ্ধ করা
৫).তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা
৬).এবং ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং তামাকজাত দ্রব্য থেকে কিশোর-তরুণদের সুরক্ষিত রাখা

ইয়ুথ এডভোকেট যারীন তাসফিয়া বলেন, ” তামাকের বিষাক্ত ধোঁয়া আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে ফেলছে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য পরোক্ষ ধূমপান মারাত্মক ক্ষতিকর, যা গর্ভপাত, নবজাতকের কম ওজন নিয়ে জন্ম এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগের কারণ হতে পারে। তাই নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস ও কার্যকর করার জোরালো দাবি জানাচ্ছি।

নারী মৈত্রীর প্রকল্প সমন্বয়ক নাসরিন আক্তার বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো তরুণদের বিভ্রান্ত করতে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে যে,প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস হলে সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাবে। তবে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ও ২০১৩ সালে সংশোধনের পর গত ১৮ বছরে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে সাড়ে ১২ গুণ। একই সঙ্গে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ১৮% হ্রাস পেয়েছে।

তারা আরো বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায় প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হলে তামাক খাতে জড়িত ১৫ লাখ খুচরা বিক্রেতা তাদের কর্মসংস্থান হারাবে।, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায় জরিপ ২০২১ অনুযায়ী, দেশে মোট খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৫ লাখ ৩৯ হাজার, যার মধ্যে খাদ্য, পানীয় ও তামাকপণ্য বিক্রি করে এমন দোকানের সংখ্যা মাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪১টি। তাছাড়া, এসব দোকানে সাধারণত অন্যান্য পণ্যের সঙ্গেই তামাকপণ্য বিক্রি হয়, তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস হলে তাদের কর্মসংস্থানে উল্ল্যেখযোগ্য কোন প্রভাব পড়বে না। তামাক কোম্পানির এসব মিথ্যাচার তরুণদের বিভ্রান্ত করছে এবং তারা যেন এই অপপ্রচারে প্রভাবিত না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..