 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের ২০২৪-২৫ সালের গাছ কাটা সংক্রান্ত মিডিয়া মনিটরিং রিপোর্ট প্রকাশ।
রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আর ডি আর সি), পরিবেশবিষয়ক সংগঠন গ্রীন ভয়েস-এর সহযোগিতায়, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে “বাংলাদেশে গাছ কাটা (২০২৪–২০২৫)” শীর্ষক সর্বশেষ প্রতিবেদনটি আজ ১৯ জুন ২০২৫, ঢাকার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সম্মেলনকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জহির ইকবাল, উপ বন সংরক্ষক, বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর; আলমগীর কবির, সাধারন সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা); আমিনুর রসুল, যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা); আহসান রনি, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, গ্রীন সেভার্স; হুমায়ুন কবির সুমন, গ্রীন ভয়েস; গোলাম ইফতেখার মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক, ঢাকা স্ট্রিম; আল ফাতাহ মামুন, সাংবাদিক, বণিক বার্তা; পরিবেশ আন্দোলনকর্মী, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং পরিবেশ সংরক্ষণে নিবেদিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদাররা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক এবং রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের Fellow মো. আমিনুর রসুল।
উক্ত অনুষ্ঠানে গ্রীন ভয়েসের কেন্দ্রীয় সমণ্বয়ক হুমায়ুন কবির সুমন তার সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। তিনি গাছের পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক উপকারীতা সম্পর্কে আলোচনা করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিল ২০২৪ থেকে এপ্রিল ২০২৫ সময়কালে বাংলাদেশজুড়ে ১,৮১,৮১৮টি গাছ কাটা হয়েছে— যা গতবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী কাটা ১১,৪৬,৪৬৫টি গাছের তুলনায় প্রায় ৮৪.১% কম।
ঢাকায় কাটা গাছের সংখ্যা ছিল ৪,২৯৬টি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
•	ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে কাটা ধানমন্ডিতে ২,০০০টি গাছ, এবং ধানমন্ডি লেকে অতিরিক্ত ৩০টি গাছ।
•	ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অধীনে পান্থকুঞ্জ পার্কে ২,০০০টি গাছ।
প্রতিবেদনটিতে অবৈধ গাছ কাটায় জড়িত নানা সংস্থার কথাও উঠে এসেছে, যেমন: বন বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ (RHD), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (LGED), শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, কাঠ ব্যবসায়ী এবং কিছু বেসরকারি কোম্পানি। এ তথ্য দেশে বন সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনার কাঠামোগত দুর্বলতাকে ইঙ্গিত করে।
প্রতিবেদনটিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দখলকৃত বনভূমি পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের কথাও বলা হয়েছে:
•SUFAL প্রকল্পের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার: ২,৫৬,৮৯০ একর
•সোনাদিয়া দ্বীপে হস্তান্তরিত: ৯,৪৬৭ একর
•কক্সবাজারে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াধীন: ১২,০০০ একর
স্থানীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার:
•উখিয়ায়: ১৫ একর •মৌলভীবাজারে: ৩০ একর
•গাজীপুরে: ৪-৬ একর জমি •চুনতি (লোহাগাড়া): ১.৫ একর
মোট পুনরুদ্ধারকৃত বনভূমি: আনুমানিক ২,৮০,৪৩৮ একর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বনভূমি পুনরুদ্ধারের ভূমিকার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক ইফতেখার মাহমুদের বক্তব্যে উঠে আসে নীতিমালা কঠোর করার পরামর্শ। তিনি আরও বলেন, গাছকে পার্সোনাল এসেট না ভেবে, প্লানেট এসেট হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। তাহলে গাছ রক্ষা সম্ভব হবে।
গ্রীন সেভার্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আহসান রনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঠিকভাবে গাছ রোপন করার এবং তাদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের সময় বাড়ানোর পরামর্শ জানান।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারন সম্পাদক, আলমগীর কবির বলেছেন, গাছ শুধু অক্সিজেন দেয় না, গাছ কার্বন-ডাই অক্সাইড ও নাইট্রোজেন বস্তুকণা শোষণ করে। গাছ কাটার আইন প্রয়োগ জোড়ালো করা প্রয়োজন।
সঞ্চালক মো. আমিনুর রসুল বলেন, প্রচলিত আইনের যে সকল ত্রুটি রয়েছে তার পরিবর্তন প্রয়োজন রয়েছে। গাছ রক্ষায় বন বিভাগের নজরদারী ও তাদের ক্ষমতা দেয়ার জন্য আইনের সংশোধন করতে হবে। গাছ লাগানোর জন্য এবং সংরক্ষনের জন্য আইনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের উপবন সংরক্ষক জহির ইকবাল প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রশংসা করেন। এছাড়াও তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে সকল শ্রেণীর মানুষের আন্তরিকতা ও যোগাযোগের সহজলভ্যতার ব্যাপারে আলোকপাত করেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সাথে MOU সহ অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে ঢাকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির কথা জানান।