ক্যাম্পাস খোলার রোডম্যাপ ঘোষণাসহ ৩ দফা দাবিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিমুখে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের মিছিল পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে থেকে এ মিছিল শুরু হয়। মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, হাইকোর্ট ও প্রেসক্লাব ঘুরে সচিবালয়ের সামনে গেলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকে দেয়।
প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনে আগাতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। পরে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনেই সমাবেশ করেন ছাত্র সংগঠনসমূহ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কোনো ধরণের পরিকল্পনা না নিয়ে, বারবার শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের তারিখ বাড়ানোয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে ‘সবার জন্য ভেকসিন দাও, নইলে গদি ছেড়ে দাও’, ‘ভোট চলে, সংসদ চলে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনা ধরে’, ‘শিক্ষা ব্যবসা যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’, ‘অচল ক্যাম্পাস সচল কর, শিক্ষাজীবন রক্ষা কর’ বলে শ্লোগান দেন সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীরা।
এর আগে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। সেখানে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেন সংগঠনসমূহ। তাদের তিন দফা দাবি হলো:
১. রোডম্যাপ ঘোষণা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দাও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সকলকে ভ্যাকসিন দাও।
২. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আয়ের উপর ১৫% কর আরোপের প্রস্তাবনা প্রত্যাহার কর।
৩. করোনাকালে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি মওকুফ কর।
বাধা পরবর্তী সমাবেশে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, আমরা শুরু থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান করছি, কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা সমন্বিত কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। আজ দেড় কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন একটা ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে আছে। অথচ শিক্ষামন্ত্রী যখনি প্রেস ব্রিফিংয়ে আসছে, তখনি তিনি বলেন, অনলাইন শিক্ষা ভালোভাবে চলছে। অথচ শুধুমাত্র প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যকর চলছে না।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফন্টের সভাপতি আল কাদেরি জয় বলেন, শিক্ষামন্ত্রী মাঝে মাঝে অনলাইন ব্রিফিংয়ে আসেন আর বলেন, ১০ দিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে, অমুক দিন খুলবে। আমরা দেখছি, শিক্ষামন্ত্রী একের পর এক তারিখ ঘোষণা করে আর মানুষ হাসে। আসলে এটা কোনো শিক্ষামন্ত্রী না, এই শিক্ষামন্ত্রীকে বলা উচিৎ ‘সার্কাস মন্ত্রী’ সার্কাস মন্ত্রী হিসেবে দিপু মনি জনগণের যে শিক্ষার অধিকার, ছাত্রদের যে শিক্ষার অধিকার, তা নিয়ে সার্কাস খেলছেন।
তিনি প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, ৬ লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ করে দিয়েছে, কিন্তু এই বাজেটে জনগণের শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকারের দিকে নজর না দিয়ে কিভাবে জনগণের আরো ঋণনির্ভর করা যায়, সে ব্যবস্থা করেছে।
‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর আরোপের নামে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার যে চক্রান্ত, সে চক্রান্তকে হালাল করা হচ্ছে। আর ওই ব্যাবসায়ীদেরকে টিউশন ফি বাড়িয়ে দেয়ার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।’
এছাড়া অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মাইনুদ্দীন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের (একাংশ) সভাপতি মিতু সরকার, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনায়ন চাকামা, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দিপক শীল প্রমুখ।