সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮ অপরাহ্ন , ই-পেপার
শিরোনামঃ

নড়াইলের ভয় আর আতঙ্কে রয়েছে লোহাগড়ার দিঘলিয়া সাহাপাড়ার বাসিন্দারা,

শরিফুজ্জামান নড়াইল
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের
গ্রেফতার আতংকে গ্রামশুন্য পুরুষ সদস্যরা
সাহাপাড়ার বাসিন্দারা বাড়িতে ফেরেননি এখনো। মঙ্গলবারও বাজারের প্রায় অর্ধেক দোকান খোলেনি। আতঙ্ক কাটেনি তাদের। ভয়, আতংক আর নিরাপত্তাহীনতায় কুঁকড়ে রয়েছে এ পাড়ার বাসিন্দারা।
মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) কটূক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালানো হয় । গত শুক্রবার সন্ধ্যায় হামলার পর থেকে সাহাপাড়ার মহিলাসহ তাদের ছেলেমেয়েরা বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি চলে যান ।
এ দিকে বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গত রোববার দুপুরে মামলা করেছে। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে গত শনিবার রাতে আকাশ সাহার বিরুদ্ধে মামলা করেন দিঘলিয়া এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দিন কচি। শনিবার রাতেই আকাশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন দিয়ে গত রোববার বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল আলম তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ফেসবুক পোস্টের জের ধরে গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর দিঘলিয়ার সাহাপাড়ায় দুটি বাড়ি ভাঙচুর হয়। একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। বাজারের তিনটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। তখন চারটি মন্দিরে হামলার ঘটনাও ঘটে।
এর আগে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া অভিযুক্ত তরুণের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে বিক্ষুব্ধ মানুষ । পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা করে ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
রাতে সাহাপাড়ার বাসিন্দা দিঘলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ চন্দ্র সাহা ও ব্যবসায়ী গৌর সাহার বাড়িতে হামলা করে বিক্ষুব্ধ লোকজন। পান বিক্রেতা গোবিন্দ সাহার বাড়ির একটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ছাড়া দিঘলিয়া বাজারে গৌতম সাহা, নিত্যদুলাল সাহা ও অনুপ সাহার দোকান ভাঙচুর করা হয়। হামলা করা হয় ওই এলাকার রাধাগোবিন্দ মন্দির, আখড়াবাড়ি সর্বজনীন মন্দির, মহাশ্মশান কালীমন্দির ও স্বপন সাহার পারিবারিক মন্দিরে।
রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি

সভাপতি শিবনাথ সাহা বলেন, সাহাপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে এ পাড়ার বাসিন্দারা বাড়ি ছাড়তে থাকেন। রাত একটার পর ভয়ে অধিকাংশ বাড়ি ফাঁকা হয়ে যায়। যারা রাতে বাড়িতে ছিলেন, তাদের রাত কেটেছে না ঘুমিয়ে। বাকিরা পরদিন ভোরে বাড়ি ছাড়েন। এ সব পরিবারের সদস্যরা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ায় ১০৮টি হিন্দু পরিবারের বসবাস। সর্বোচ্চ ২৫ / ৩০ জন পুরুষ বাড়িতে আছেন। বাড়িতে নেই কোনো নারী। তারা আতঙ্কে বাড়িতে ফেরেননি।
এ দিকে আখড়াবাড়ি গ্রামের শিক্ষক শচিদানন্দ জানান, ঘটনার পরদিন শনিবার রাতে তার দুটি গরু গোয়ালঘর থেকে কে বা কারা নিয়ে গেছে। পুলিশী প্রহরার মধ্যে বাড়ি থেকে গরু চুরির ঘটনা রহস্যজনক বলে স্থানীয়দের অভিমত।
অপর দিকে গ্রেফতার আতংকে ভুগছে দিঘলিয়া ইউনিয়নের পুরুষরা। অধিকাংশ পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়িতে নেই বলে জানিয়েছেন পরিবারের মহিলা সদস্যরা।
লোহাগড়া থানার ওসি শেখ আবু হেনা বলেন, ‘অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..