অবৈধ পথে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের শিকার বাংলাদেশী ২৩ জন কিশোর-কিশোরী, শিশু ও মহিলা ভিন্ন মেয়াদে ভারতে জেল খেটে বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যেমে দেশে ফিরেছে
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকালে কোলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দুতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) এবং হেড অব চ্যাস্নেরী শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি ও ভারতের পেট্রাপোল চেকপোষ্টের ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলীফ রেজা উপস্থিত ছিলেন।
ফেরত আসারা হলেন, নড়াইল জেলার আব্দুর রব মোল্যার মেয়ে রিপা খাতুন (১৯), নোয়াখালী জেলার নুর ইসলামের মেয়ে তানিয়া আক্তার (১৯), বাগেরহাট জেলার বেলাল শেখ এর মেয়ে হামিদা আক্তার (১০), একই জেলার মহসিন মোল্যার মেয়ে সাদিয়া খাতুন (১৬), হানিফ সর্দার এর মেয়ে নুসরাত জাহান জান্নাতি (১১), মনির হাওলাদারের ছেলে মেহেদী হাসান (৮), আন্না তালুকদার এর ছেলে জাকির তালুকদার (১৩), শয়িতপুর জেলার নুরহোসেন গাজির মেয়ে শান্তা আক্তার গাজি (১৬), ঢাকা মুন্সিগঞ্জের নওশিন রহমান (১৪), নড়াইল জেলার ইসরাফিল শেখ এর ছেলে আলাউদ্দিন শেখ (১৫), ঢাকা জেলার জামাল হোসেনের ছেলে নাঈম হোসেন (১১), খূলনার মুছা সর্দার এর ছেলে মনির হোসেন (১০), নড়াইল জেলার প্রশান্ত বিশ্বাসের ছেলে প্রান্ত বিশ্বাস (১৫), ময়মনসিংহ জেলার আজিজুল হক এর মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯), নরসিংদি জেলার রবিউল আওয়াল এর মেয়ে তাছলিমা আক্তার সেতু (১৭), খূলনার আজিজুল গাজির মেয়ে ফাতেমা খাতুন (১২), বাগেরহাট জেলার গোপাল বিশ্বাসের মেয়ে বিউটি মন্ডল (২৪), নিহারমন্ডল এর ছেলে পার্থ মন্ডল (৩), লালমনিরহাট জেলার মুকুল দাসের ছেলে হৃদয় দাস (১৫), জয়পুর হাট জেলার সিরাজুল ইসলামের ছেলে হাসান মোহাম্মাদ (১৬), যশোর মনিরামপুর থানার হযরত আলীর মেয়ে শিল্পী খাতুন (২৬), খূলনার শাহিন হোসেনের মেয়ে সুমনা আক্তার রিয়া (২০), নড়াইল জেলার নজরুল সিকদার এর মেয়ে জুলি খাতুন (৩০) ।
ফেরত আসা জুলি খাতুন বলেন, অভাব অনটনের সংসারে সে ভালো কাজের আসায় সীমান্তের অবৈধপথে ভারত পাড়ি জমায়। এরপর সেখানে রাজমিস্ত্রির যোগাড়ে হিসাবে কাজ করার সময় পুলিশের কাছে আটক হয়। সে প্রায় সাত বছর পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আজ দেশে ফিরেছে।
বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে কোলকতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দুতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) এবং হেড অব চ্যাস্নেরী শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি বলেন, এরা ভালো কাজের আশায় আবার অনেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে পাসপোর্ট ভিসা বাদে ভারতে যায়। এরপর সেদেশের পুলিশের কাছে আটক হয়ে ২ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত জেল খাটে। এরা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে আদালতের মাধ্যেমে সুবায়ন, অলবেঙ্গল সহ বিভিন্ন শেল্টার হোমে ছিল। এরপর দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যেমে বিশেষ ট্রাভের পারমিটের মাধ্যেমে আজ দেশে ফেরে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি তদন্ত ইলিয়াছ হোসেন বলেন, এরা দালাল এবং স্বইচ্ছায় অবৈধপথে ভারতে পাড়ি জমায়। আবার এর মধ্যে অনেকের বাবা মা এখনো ভারতে রয়েছে। তারা পুলিশের ভয়ে পালিয়ে গেলেও তাদের ছেলে মেয়েরা পুলিশের কাছে আটক হয়। এরা বিভিন্ন শেল্টার হোমে থাকার পর আজ দেশে ফিরেছে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যেমে। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভুইয়া বলেন, ফেরত আসা শিশু কিশোর, কিশোরী ও মহিলাদের থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেসরকারি এনজিও সংস্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ার এর এরিয়া ম্যানেজার আব্দুল মহিদ বলেন, যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি ও যশোর রাইটস নামে তিনটি এনজিও সংস্থা এদের গ্রহন করে। এবং যশোর নিজ নিজ শেল্টার হোমে নিয়ে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।