দুর্নীতি মামলায় নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক পৌরমেয়র অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাসসহ ১১ জনকে ৫বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ১০হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে যশোর স্পেশাল জজ আদালত।
তৎকালীন নড়াইল পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, কমিশনার ও ইঞ্জিনিয়ারসহ ১১ জনকে এই দ- দেয়া হয়েছে।
নড়াইলের রূপগঞ্জ হাট ইজারা দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এক রায়ে এ দন্ডাদেশ দিয়েছেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের পিপি অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন নড়াইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, তৎকালীণ কাউন্সিলর কাউন্সিলর খন্দকার আল মনসুর বিল্লাহ, কাউন্সিলর আহম্মদ আলী খান, কাউন্সিলর তেলায়েত হোসেন বাবু, ইজারাদার রফিকুল ইসলাম, ইজারাদার রাধে কুন্ডু, ইজাজুল হাসান বাবু, ইজারাদার জিল্লুর রহমান, হাট ইজারাদার এইচএম সোহেল রানা, তৎকালীন পৌর সচিব শফিকুল আলম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ওয়াজিহুর রহমান।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে বিশ্বাস ভঙ্গ করে নীতিমালা ২০০২ এর ৩(ঘ) অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করে আসামিরা ১৪১২(বাংলা) সালে হাট বাজার ইজারা দেয়। আসামিরা নড়াইল পৌরসভার রূপগঞ্জ সাধারণ হাট ও নড়াইল বাস টার্মিনাল ইজারা দিয়ে ৭ লাখ ৮১ হাজার ২০ টাকা ও ১৪১১ সালে একই হাট ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা আদায় করে। সর্বমোট ১২ লাখ ২২ শ ৮০টাকা পৌরসভায় জমা না দিয়ে আসামিরা আত্মসাৎ করে। এব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী পৌর মেয়র, কাউন্সিলর, ইঞ্জিনিয়ার সচিবসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল জজ আদালতে প্রেরণ করা হয়। এই মামলায় সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাস করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। একইসাথে আত্মসাৎকৃত ১২ লাখ ২২ শ ৮০ টাকার মধ্যে আসামি জিল্লুর রহমান ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬০ টাকা, সোহেল রানা ৩ লাখ ৫২ হাজার ১শ ২০ টাকা, রাধেকুন্ডু ৩ লাখ ৫০ হাজার, রকিবুল ইসলাম ১ লাখ ৮৫ হাজার, ইজাজুল হাসান ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯শ’ টাকা পরিশোধ করবে। সাজাপ্রাপ্ত এজাজুল হাসান, জিল্লুর রহমান ও রকিবুল হাসান বাদে সকলেই কারাগারে আটক আছেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির মামলায় অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস সহ ৮ জনকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬’শ ৬৫ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদন্ড হয়।
দুদকের মামলায় রাঘ ঘোষণার কয়েকিদন পর ওই বছরের ২ অক্টোবর যশোর স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হলে তাঁদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। পরবর্তীতে ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান এবং স্বপদে বহাল হন।