বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪ অপরাহ্ন , ই-পেপার

লোহাগড়া নলদী অবৈধ মুরগি ও গরুর খামারে পরিবেশ দূষণে জনজীবন অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।

শরিফুজ্জামান, নড়াইল
  • আপলোডের সময় : শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১

নড়াইল লোহগড়া উপজেলা নলদী ইউনিয়নের ব্রক্ষ্মানিনগর গ্রামের আবাসিক এলাকায় একইস্থানে মুরগী ও গরুর খামার করে পরিবেশ দূষণে জনজীবন অতিষ্ঠ করছে।ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবেশি এলাকার মানুষের অনুনয় বিনয়কে তোয়াক্কা নাকরে বরন্ঞ্চ তাদের নানান ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে চলেছে।পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত দিয়েও প্রতিকার হয়নি। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বহি কর্মকর্তা বরাবরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুতই তদন্তে মাঠে নেমেছেন প্রশাসন। তবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে খামার মালিক দৌড় ঝাপ তদবির লোভ টোপ অব্যাহত রেখেছে।

প্রাপ্ত অভিযোগ ও সরোজমিনে দেখা যায়”- ব্রক্ষ্মনিনগর গ্রামের ইউনুস মোল্লা। মিঠাপুর-নলদি সড়ক সংলগ্ন তাঁর নিজ বাড়ি। এখানেই তিনি গড়ে তুলেছেন হাইব্রিড মুরগির ও সাথে গরুর খামার!? ছোট বড় মিলিয়ে ৩টি মুরগির ঘর ও ১টি গরুর ঘর মুরগি ধারন ক্ষমতা ৫ থেকে ৩ হাজারটি। খামারের চতুর্পাশেই বাড়ি! কিছুটা দুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

এ মুরগি ও গরুর খামারে পয়ঃনিস্কাশন ও ড্রেনেজ ব্যাবস্থাও নেই!? মাচাকরে মুরগি রাখায় পরিত্যাক্ত বিষ্টা” পায়খানা উচ্ছিষ্ট খাবার গড়পঁচে ব্যাপক দূ’গন্ধের তাতালো ঝাজে স্বাস প্রশাসে মারাত্বক কষ্ট হয়। তার সাথে রয়েছে গরুর গবর! এ মোটা তাজা করণ খামারের একই অবস্থা বিরাজমান। গবর ও মুত্রের কোন হাউজ বা পরিবেশে দূ’গন্ধ ছড়াতে না পারে এমন ব্যাবস্থা!

এ ২ খামারের উৎকট গন্ধে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ বাদ পড়েননি সড়ক ব্যাবহারকারি যানবাহনের যাত্রী থেকে পথচারি।এখামারের প্রায় ১৫০ গজ উত্তর পশ্চিমে রয়েছে ব্রক্ষ্মানি নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়! কোমল মতি শিশু শিক্ষার্থিরা এ সড়কে যাতায়াত ও বিদ্যালয় থেকে এ উৎকট গন্ধ শয্য করে যাতায়াত করে।

এ অসুবিধার কথা খামার মালিক ইউনুস ও তাঁর পরিবারের নিকট জানালে তাঁরা তাচ্ছিল্য করে!? জানায় বসবাস করতে না পারলে আমরা কি করবো? আমরা আমাদের বাড়িতে খামার করেছি, তোমাদের জমিতে বানাই নাই। তোমরা বসবাস করতে না পারলে অন্যত্র চলে যাও। তা ছাড়া নানান হুমকি ধামকি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

লোহাগড়া পরিবেশ অধীদপ্তরে জানালে তাঁরা স্থানিয় ভাবে জনপ্রতিনি ও প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যাস্থানিতে বলেন।

এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে খামারির নিকট প্রতিবেশি, প্রয়াত কবি কাঙ্গাল সামছুর রহমানের কন্যা শিল্পী খানম(১৮ আগষ্ট-২০২১) জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও লোহগড়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেন।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুতই তদন্তে মাঠে নেমেছেন -লোহগড়া প্রাণী সম্পদ বিভাগ, তাঁরা (২৬ আগষ্ট) সরোজমিনে তদন্তে নামেন। কিন্তু এতদন্তের সংবাদ পেয়ে খামারি সামান্য কিছু মুরগি রেখে বাকি মুরগি মিঠাপুর বাজারের বিক্রয় কেন্দ্রে ও অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়।পরদিন (২৭ তারিখ)সকালে দেখাযায় ঘর ভর্তি মুরগি।

পুলিশ সুপারের নিকট আবেদনের প্রেক্ষিতে লোহাগড়া থানা পুলিশের নলদী পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ তদন্ত করছেন। তবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে খামার মালিক দৌড় ঝাপ তদবির লোভ টোপ অব্যাহত রেখেছে।

অপরদিকে প্রতিকার চেয়ে আবেদন কারি শিল্পি খানম জানান, আমরা এলাকাবাসি চরম দূগন্ধের মধ্যে বেঁচে আছি। আমার মা বৃদ্ধ মানুষ- তারপর এ পরিবেশে তাঁর জন্য চরম অসস্তি কর। আমরা এলাকাবাসি আবাসিক এলাকায় এ ধরনের খামার থাকায় চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে। প্রসাশন ও আইন প্রয়োগকারি সংস্থার কাছে অবৈধ খামারটি উচ্ছেদের জন্য আবেন করেছি। তাঁরা দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাবাদি।

গত (১৮ আগষ্ট)খামার মালিক ইউনুসের মিঠাপুর বাজারের বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযানে চালানো কালে তার দোকানে লুকানো ২টি মরা মুরগি উদ্ধার করে। এ সময়
ভ্রাম্যমান আদালত (২০ হাজার টাকা জরিমানা করে) তবে খামার মালিক জানান, আমাকে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার কথা জানায়।আমি অপারগতার কথা জানালে ও ক্ষমা চাইলে ২০ হাজার টাকায় রফা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যাক্তিরা জানান, খামারি’র কোন লাইসেন্স ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান প্রয়োজনীয় লাইসেন্স নেই। তবে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের পর ইউনিয়ন পরিসদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছেন। অসুস্থ ও মরা মুরগি কমদামে অসাধু ব্যাক্তির হোটেলে কমদাম বিক্রয় করে আসছে বলেও জানান।

আইনি কি ব্যাবস্থা আছে এ ব্যাপারে?’ – বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন`- ১৯৯৫,১৯৯৭ এবং২০১০”-অনুযায়ী মানব বসতি পূর্ণ এলাকায় যে কোন দূষণকারী ফার্ম বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা উদ্যোগ গ্রহণ একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ আইনের ধারা-৪(ক), ৫,৭,৮ লঙ্ঘিত হলে, প্রথমবার অপরাধের ক্ষেত্রে অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার থেকে অনধিক ২ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

মানুষের জীবীকার জন্য বিভিন্ন উপায় আছে কিন্তু বসবাসের জন্য বিভিন্ন বাড়ি-ঘর নাই।সুস্থ, সুন্দর ও নির্মল পরিবেশে বসবাস মানুষের নাগরিক অধিকার।একজন মানুষ সারাদিন পোল্ট্রির বিষ্ঠার দূর্গন্ধ নিয়ে বাঁচতে পারে না।এটা শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি ব্যক্তিকে মানুষিকভাবে স্বাস্থ্যহীন করে তার পথচলাকে থামিয়ে দেয়।

ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে যারা মনুষ্যত্বকে জলাঞ্জলি দেয় তারা মানুষ নামের পশু। মাননীয় সরকার প্রধান বলেছেন- গোলা ভরা ধান,গোয়াল ভরা গরু,পুকুর ভরা মাছ, কিন্তু তিনি বলেননি আবাসিক এলাকায় ফার্ম ভরা মুরগী!

আমি আশা করবো, সরকার আইনের শাসন বাস্তবায়নের লক্ষে এই অবৈধ ফার্মগুলি আবাসিক এলাকার বাইরে অন্যত্র স্থাপনপূর্বক ফার্ম স্থাপনকারীর শাস্তি ও জরিমানা কার্যকর করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতঃ ভুক্তভোগীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করবেন।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..