মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
নড়াইল সদরে দ্বিমুখী ও লোহাগড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়াই হবে ত্রিমুখী বাগেরহাটে মোরেলগঞ্জে জীবনের ঝুৃঁকি নিয়ে ভাঙা কাঠের পুল দিয়ে পার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। চা শ্রমিক দিবস,মুল্লুকে চলো আন্দোলনের ১০৩ বছর। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ভিত্তিহীন – মাশরাফী কুকুরের দল তাকে একা পেয়ে কামড়ে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে বাগেরহাটের শরণখোলায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীরির আত্মহত্যা সিংড়ায় ভোক্তা-অধিকারের অভিযানে তিন প্রতিষ্ঠান কে জরিমানা  সাতক্ষীরার তালায় ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত আহত ১১   বাগেরহাটের রামপালে লায়ন ড.শেখ ফরিদুল ইসলামের উদ্যোগে চোখের ছানি অপারেশন ও লেন্স সংযোজন ৫০০ রোগী বাছাই লোহাগড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী কে এম ফয়জুল হক রোমের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ 

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি শিক্ষার্থীবান্ধব হবে কবে?

নাফিউল ইকবাল,চবি প্রতিনিধি।
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ১ মে, ২০২৪
 বই যদি হয় মানুষের অন্তহীন জ্ঞানের আঁধার , তাহলে বইয়ের আবাসস্থল হলো গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি। গ্রন্থাগারের এক একটি তাকে ঘুমিয়ে থাকে মানুষের হাজার বছরের লিখিত-অলিখিত ইতিহাস ।  কালের খেয়াঘাট, যেখান থেকে মানুষ সময়ের পাতায় ভ্রমণ করে, অতীত খুঁজে বেড়ায় ও ভবিষ্যতে সেই স্মৃতি নিয়ে বাঁচতে উদ্বুদ্ধ হয়। লাইব্রেরি তে কি না থাকে! এখানে থাকে প্রাচীন শিলালিপি থেকে আধুনিক লিপি পর্যন্ত। একটি গ্রন্থাগার মানব জীবনকে যেমন পাল্টে দেয় তেমনি আত্মার খোরাকও যোগায়, উন্নয়নের পথ বাতলে দেয়। তাই গ্রন্থাগারকে বলা হয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আত্মীয় যার সাথে সবসময় ভালো সম্পর্ক থাকে। যার কাছে থাকলে মন ভালো থাকে, মেধা বিকশিত হয় ও নতুন কিছু জানার ইচ্ছা তৈরি হয়। জ্ঞানচর্চা ও বিকাশের জন্যই মূলত গ্রন্থাগারের সৃষ্টি।
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি হওয়া উচিত শিক্ষার্থীবান্ধব। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যা চাইবে, তা লাইব্রেরিতে থাকতে হবে। কেননা লাইব্রেরি সৃষ্টি শিক্ষার্থীদের জন্যই। শিক্ষার্থীদের সান্নিধ্য পেলেই গ্রন্থাগার তার অস্তিত্ব ফিরে পায়, সজিব হয়। শিক্ষার্থীদের মনের খোরাক মিটাতে না পারলে, লাইব্রেরিতে যাওয়ার সদিচ্ছা জন্মায় না। ফলে গ্রন্থাগার তার অস্তিত্ব নিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হয়। গ্রন্থাগারই হচ্ছে এমন যায়গা যেখানে  হাজারো অতীত নামক ভালোবাসার মেলবন্ধন মিলে।
আমাদের পাঠাগারে কেন যাওয়া উচিত তা  বিশদভাবে বলতে গেলে পাঠাগার হলো বই, পুস্তিকা ও অন্যান্য তথ্য সামগ্রীর একটি সংগ্রহশালা যেখানে পাঠকের প্রবেশাধিকার থাকে এবং পাঠক সেখানে গবেষণা ও তথ্যানুসন্ধ্যান করতে পারে।  পাঠাগারের সৃষ্টি হয় মানুষের বই পড়ার আগ্রহের বাতিঘর থেকে।  পাঠাগারের বইয়ের পাতায় শতাব্দী থেকে শতাব্দী ধরে মানুষের জ্ঞান জমা হয়ে থাকে। সেই জ্ঞান মানুষ ধারণ করে এবং তা  জীবনে লালন করে। কিন্তু এমন পাঠাগার দিয়ে কি হবে যে পাঠাগার মানুষের মনের খোরাক যোগাতে পারে না? নিজ দেশের সংস্কৃতিকে লালন করতে পারে না? সময়ের সাথে নিজেকে হালনাগাদ করতে পারে না?
৪ লাখ বইয়ের সমারোহে ঘেরা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি। যদি প্রশ্ন করা হয় এই পাঠাগারে কি আছে? তাহলে আছে বলতে নানা রকমের বই, পাণ্ডুলিপি, সাময়িকী, সংবাদপত্র, পত্রিকা, উপাত্ত, গবেষণা, বিশ্বকোষ, অভিধান, হ্যান্ডবুক, ম্যানুয়েল, মানচিত্র সহ বিভিন্ন সংগ্রহ। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রায় আড়াইশ থেকে একশ বছরের মধ্যে অনুলিখিত প্রাচীন ভূজপত্র, তানপত্র, হাতে তৈরি তুলট কাগজ, তালপাতা ও বাঁশখণ্ডের উপর বাংলা, সংস্কৃত, পালি, আরবি, ফার্সি এবং উর্দু ভাষায় রচিত পাণ্ডুলিপি সংগহ এবং আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ কর্তৃক সংগৃহীত ১৮৭২ থেকে ১৯৫৩ সালের মধ্যে প্রকাশিত প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুরানো সাময়িকী।
এই লাইব্রেরির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল গবেষণাগার হিসাবে। কিন্তু বর্তমানে যদি প্রশ্ন করা হয়, এই লাইব্রেরিতে কি নেই? তাহলে প্রথম উত্তর আসবে গবেষণার বিন্দুমাত্র বালাই নেই। শিক্ষার্থীদের চাকরির উপযোগী বই নেই। শিক্ষার্থীদের ক্রয় করা বই ভিতরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বই খুঁজতে গিয়ে সার্ভারের লোডিং এর শেষ নেই! তাকে তাকে থাকা পুরনো বইয়ের পাতার উপর ধুলাবালির কমতি নেই। এ বা কম কিসের? শিক্ষার্থীদের কথা শুনে কে? যে লাইব্রেরির তৈরি শিক্ষার্থীদের জন্য আজ পাঠক হারাচ্ছে সেই পাঠাগারই।
লাইব্রেরীর নিয়মিত শিক্ষার্থী রাসেল হোসেন সাকিব জানান, এই তীব্র গরমে ফ্যানের সংকট খুব মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের চাকরি পরীক্ষার বই নিয়ে লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে দেয়, সেখানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ নিষেধ করে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের বই নিয়ে লাইব্রেরি উপরের কক্ষগুলোতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। যার ফলে এই পাঠাগারে পাঠকের সংখ্যা দিন দিন কমছে। পাঠাগারে যেসকল বই রয়েছে, তার বেশিরভাগ পুরনো, সার্ভারের সমস্যা থাকার কারণে তা  ইন্টারনেট থেকে বের করা অনেক সময় দু:সাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে শিক্ষার্থীরা পাঠাগারের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও সমাধান পাচ্ছে না। অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের চাওয়াকে মূল্য দিয়ে লাইব্রেরি নতুন করে সাজাতে হবে। নতুবা দিন শেষে আপসোস নিয়ে বলতে হবে, এই লাইব্রেরি শিক্ষার্থীবান্ধব হবে কবে?

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..