খুলনার পাইকগাছায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যেও নারী কৃষি শ্রমিকরা পানিতে নেমে বোরো ধান রোপণ করছেন। শীতের কারণে সাধারণ মানুষের জনজীবন যেখানে স্থবির হয়ে পড়েছে, সেখানে কৃষি শ্রমিকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে সংসারের যাবতীয় কাজ শেষ করে কর্মক্ষেত্রে ছুটে যাচ্ছেন শত শত নারী।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে,বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ৫ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার সর্বত্র প্রচণ্ড শৈত্যপ্রবাহ চলছে। সোমবার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীর নিচে নেমেছে। বেশির ভাগ সময় সূর্যের মুখ দেখা যায় না।এর মধ্যে পুরোদমে বোরো ধানের চারা রোপন চলছে।
শীত আর কুয়াশাকে উপেক্ষা করে ছুটে চলেছেন নারীরা।
ঝড়-বৃষ্টিকেও তোয়াক্কা করেন না তারা। কর্মজীবী এই নারীরা ক্ষেতে-খামারে কাজ করে আয়-রোজগারের মাধ্যমে সংসারের চাকাকে সচল রাখছেন। কৃষি ফসল উৎপাদন ও পরিচর্যা বিশেষ করে শীতের সবজি চাষাবাদ ও নিড়ানিতে অবদান রেখে চলেছেন তারা। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে মাঠে মাঠে নারী ও পুরুষ কৃষি শ্রমিকরা কাজ করছেন। উপজেলায় বোরো ধান রোপণ পুরাদমে শুরু হয়েছে।গদাইপুর উনিয়ানের হিতামপুর বিলে বোরো ধান বীজ তলায় কাজে নিয়োজিত নারী কৃষি শ্রমিক নাছিমা বেগম বলেন, অনেক শীতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাদা ও পানিতে নেমে কাজ করতে হচ্ছে। কেউ আমাদের খোঁজ রাখে না। নারী কৃষি শ্রমিক ফাতেমা বলেন, মাঠে আমরা পুরুষের সমান কাজ করলেও নারী হওয়ার কারনে মজুরি কম পাই। পুরুষরা সারা দিন পাঁচ’শ টাকা পেলে নারীরা পায় তিন’শ টাকা। মানুষ যখন জবুথবু হয়ে পড়েছে তখন প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে পেটের দায়ে আমাদের খোলা মাঠে কাজ করতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ বলেন, কৃষিতে নারীর সংশ্লিষ্টতা ও অবদান ব্যাপক। কৃষিতে নারী-পুরুষেরা সমান তালে কাজ করছে। গত মৌসুমে কৃষকরা ধানের দাম বেশি পেয়ে বোরো ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধান রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে।তীব্র শীতের মধ্যে ধানের চারা রোপন না করে শীত কমলে চারা রোপন করার জন্য বলা হয়েছে।এছাড়াও কৃষি অফিস থেকে শীতের মধ্যে বোরো রোপন করার বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..