নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার তেলকাড়া গ্রামে নিজাম হত্যাকান্ড এ যেন সত্য মিথ্যার প্রভেদ। ধোঁয়াশার জাল বোনা এ হত্যাকান্ড।
পরকিয়ার জেরে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হতে পারে বলে ধারনা করছে সচেতন মহল। ০৩ জুন (শুক্রবার) সরেজমিনে অনুসন্ধানে গেলে বেরিয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। নামপ্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, ওই গ্রামের হেমায়েত শেখের ছেলে শাহ আলমের স্ত্রী জেসমিন নামে এক গৃহবধুর বাড়ীতে নিজামের যাতায়াত ছিল। জেসমিনের স্বামী শাহ আলম জাহাজে চাকুরী করেন বলে জানা যায়। এছাড়া নিজাম প্রায়ই ওই গৃহবধুর সাথে মোবাইলে কথাবর্তা বলত এবং মাঝে মাঝে ওই বাড়ীতে রাত্রিযাপনও করত বলে তারা জানান। এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিজাম হত্যাকান্ডের স্থান থেকে ওই গৃহবধুর বাড়ী অনুমান ২০ ফুট দুরে এবং তার রান্নাঘরের পাটকাঠির বেড়ায় দুর্বৃত্তের রক্তমাখা হাতের ছাপ রয়েছে। এছাড়া ওই গৃহবধুর টিনের ঘরের বারান্দার দরজায় বাঁশের খুটিতে এবং টিনের বেড়ায় রক্ত সাদৃশ্য ফোটা ও হাতের ছাপ লক্ষ্য করা গেছে। যার কারণে সচেতন মহলে এই হত্যান্ডকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষের দাবি খুনের সঠিক কারণ উদঘাটনে পিআইবির সহায়তা নেওয়া হোক। অহেতুক নিরীহ মানুষদের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার নিন্দাও জানান তারা। পূর্ব শত্রুতার জেরে এলাকার বাহিরে থাকা অনেককে বভিন্ন ধরায় আসামী দেওয়া দুঃখজনক বলেও তারা মন্তব্য করেন।
এছাড়া আসামী পক্ষের বাড়ীর মহিলারা ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নিজাম হত্যাকান্ডের সাথে সাথেই বাড়ী পুরুষ শূণ্য হওয়ায় একই গ্রামের মিশকাত শেখের ছেলে রোমান শেখ, তামিম শেখ, কবির শেখ, সবুজ শেখ, মৃত হালিম শেখের ছেলে আমিনুল শেখ ওরফে নিঠুর ও পান্নু শেখ, মৃত ফায়েক শেখের ছেলে কামাল শেখ ও কুটি শেখ, মৃত বাদশা শেখের ছেলে মিশকাত শেখ, মুক্ত মোল্যার ছেলে দেলবার, মবিন মোল্যার ছেলে লিংকন, টুলু শেখের ছেলে জহির সহ অজ্ঞাত ১৫/২০ জন এসে বাড়িঘর কুপিয়ে বসবাসের অনুপযোগী করে গরু, ছাগল, হাসমুরগী টিভি, ফ্রিজসহ যাবতীয় মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ঢাকায় অবস্থান করছে এবং এলাকার সাথে কোন সংযোগ নেই এমন কয়েকজনকে উদ্যেশ্য প্রনোদিতভাবে মিথ্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন পূর্বক মিথ্যা মামলায় দোষী সাব্যস্তকারীদের মুক্তি চান তারা।
এদিকে এজাহারে উল্লেখিত ১৪ নং আসামীকে খুলনা থেকে আটক করেছে লোহাগড়া থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ আবু হেনা মিলন। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে আটক আলিম বিশ্বাস নিহত নিজামে বাড়ীতে কাজ করত এবং সহযোগী হিসেবে তার সাথে থাকতো। এমনকি ঘটনার সময়ও আলিম সাথে ছিল বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে আলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।