ঢাকা,১৭ নভেম্বর, বুধবার,২০২১,মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, কোন পরিবারে বাল্য বিয়ে হলে সে পরিবার সরকারি সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধা পাবে না। বাল্য বিয়ে কিশোরী মেয়েদের, তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। বাল্য বিয়ের কারণে শিশু ও নারীর কল্যাণে গৃহীত সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাল্য বিয়ে বন্ধে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়-বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি আরো উদ্যোগী হতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ইমাম, ধর্মীয় নেতা, এনজিও প্রতিনিধি ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দকে সাথে বাল্য বিয়ে রোধ করতে হবে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আজ (বুধবার) ঢাকায় ইস্কাটনে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাল্টিপারপাজ হলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের নিমিত্ত জাতীয় কমিটি’র প্রথম সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা আরো বলেন, ২০০৭ সালে ১৮ বছরের পূর্বে বাল্য বিয়ের হার ছিল ৭৪ শতাংশ যা ২০১৭ সালে ৫২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ২০০৭ সালে ১৫ বছরের নিচে বাল্য বিয়ের হার ছিল ৩২ শতাংশ যা ২০১৭ সালে এই হার নেমে এসেছে ১০ শতাংশে। বাল্য বিয়ের হার দ্রুতই কমে আসছে। সকলের সম্মিলিত প্রেষ্টায় ২০৪১ সালের আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ বাল্য বিয়ে মুক্ত হবে।
সংসদ সদস্য বেগম মেহের আফরোজ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান এনডিসি, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাম চন্দ্র দাস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং বেসরকারি সংস্থা ব্রাকের প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত ছিলেন।
২০২০ সালে গঠিত বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে জাতীয় কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে দিক-নির্দেশনা প্রদান ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে জেলা কমিটির তদারকি ও সমন্বয় করা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে চ্যালেঞ্জসমুহ চিহ্নিত করা ও তা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদান করা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ও ও নীতিসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন, এবং বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ সংক্রান্ত কাজের বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রণয়ন ও প্রকাশ করা। সভায় উপস্থিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরেন।
আজকের এ সভায় বাল্য বিয়ে বন্ধে প্রচার-প্রচারণা বাড়ানো, বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিকে আরো বেশি সক্রিয় করা, সকল মন্ত্রণালয় বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে বিয়ে বন্ধে নির্দেশনা পাঠানো, অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা ও বিয়ের রেজিট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করার সিদ্ধান্ত হয়।