বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ এক বিশেষ সেমিনারের অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার কলা ভবনের আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের পর্যটন সংস্থা ১৯৮০ সাল থেকে প্রতি বছর ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পর্যটনের গুরুত্ব তুলে ধরতে এই দিবসটি উদযাপন করে আসছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘পর্যটন ও শান্তি’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শরিফুল আলম খন্দকার’এর সভাপতিত্বে সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পিপলস এন্ড কালচার ম্যানেজার খালেদা পারভিন রুমা। তিনি পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর অবদানের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘পর্যটন শিল্পের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি করা সম্ভব, যা সমগ্র জাতির অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।’
সেমিনারে আলোচক হিসেবে অংশ নেন ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সেলস এন্ড মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক রেজওয়ান মারুফ, তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে বিশ্ব মানচিত্রে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি, পর্যটন খাতের সাথে জড়িত অন্যান্য খাতগুলোকেও উন্নত করতে হবে। অন্যান্য অতিথি ও বক্তাদের বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ডের সাবেক চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মো: জাবেদ আহমেদ তিনি বাংলাদেশের পর্যটন খাতের চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘পর্যটন খাতের উন্নয়ন করা গেলে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও সমৃদ্ধ হবে।’ অতিথিদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, জিটিভি’র মোহাম্মাদ শাহাবুদ্দি।
বক্তারা বলেন, ‘পর্যটন খাতের সঠিক উন্নয়ন কৌশল গ্রহণ করা হলে এই খাতটি দেশের অন্যতম শীর্ষ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস হয়ে উঠতে পারে।’ তারা আরও বলেন, পর্যটনের সাথে অন্যান্য খাতের যোগাযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে একে আরও সমৃদ্ধ করা যেতে পারে। তাঁরা বলেন, একটি দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বড় ভূমিকা রাখে। তাই পর্যটন খাতের উন্নয়নের সাথে সাথে দেশের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিকগুলোকেও উন্নত করা প্রয়োজন। বিশ্ব পর্যটনের মাধ্যমে আমরা দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে পারি, যা দেশের ভাবমূর্তি উন্নত করবে।
বাংলাদেশে পর্যটন খাত এখনও পর্যাপ্ত উন্নত না হলেও এর সম্ভাবনা অনেক। সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগের মাধ্যমে পর্যটন খাতকে উন্নত করে দেশকে আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বক্তারা আরও বলেন, দেশের পর্যটন অবকাঠামো উন্নত করতে হলে সরকারি এবং বেসরকারি উভয় খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। পর্যটন খাতের উন্নয়নে একটি শক্তিশালী নীতি এবং স্থিতিশীল বিনিয়োগের প্রয়োজন। সেমিনারে উপস্থিত বিশেষজ্ঞ এবং অতিথিরা পর্যটন খাতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। সেমিনারের শেষ পর্যায়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন, এতে উত্তর দেন অতিথি এবং আলোচকগণ। তারা পর্যটন শিক্ষার গুরুত্ব এবং দক্ষ জনবল তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য এই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মো. কামরুল হাসান, তিনি এই সেমিনারের কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করেন। পুরো সেমিনারে সঞ্চালনায় ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী সৈয়দা ঈশরাত জাহান প্রিয়া ও দীলারা আফরোজ উপমা। এছাড়াও সার্বিক তত্ত্বাবধনে ছিলেন একই বিভাগের ছাত্র তানজিমুল ইসলাম অয়ন।