বান্দরবানে পর্যটকদের গাড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারের ঘটনায় থমথমে।
বান্দরবানে ভ্রমণকারীদের গাড়িতে পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারের ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রোববারও ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তবে আহত ভ্রমণকারীরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চন্দ্রঘোনা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বান্দরবান জেলার রুমার উপজেলার বগালেকসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ শেষে রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী ফেরার পথে বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কের গলাচিপা নামক স্থানে রাঙামাটি জেলার ১৯ জন ভ্রমণকারীর একটি জিপ গাড়িকে টার্গেট করে ব্রাশফায়ার করে অস্ত্রধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। পাহাড়ের উপর থেকে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ারে গাড়ির চাকা ফুটো হয়ে ভ্রমণকারীদের গাড়িটি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়।
এতে কয়েকজন নারী ভ্রমণকারী মাথায় ও হাতে ব্যথা পেয়ে আহত হন। আহতদের মধ্যে দুজন হচ্ছেন- অয়সিংনু মারমা এবং মেহাইচিং মারমা। তাদের বাড়ি রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার পোয়ইতুপাড়া এলাকায়।
এদিকে ভ্রমণকারীদের গাড়িতে ব্রাশফায়ারের ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে। নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, জনমনে আতঙ্ক তৈরির জন্য ভ্রমণকারীদের জিপ গাড়িতে পরিকল্পিতভাবে প্রায় দেড়শ রাউন্ড ব্রাশফায়ার করেছে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার সঙ্গে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) মূল দলের সশস্ত্র শাখার ক্যাডাররা জড়িত।
হামলাকারী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের ধরতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে জনসংহতি সমিতির দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ব্রাশফায়ারের ঘটনাটি পর্যটন সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় নয়। পাহাড়ের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন ভেবে গাড়িতে ব্রাশফায়ার করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজা সরোয়ার জানান, ভ্রমণকারীরা রুমা উপজেলার রহস্যময় দর্শনীয় স্থান বগালেক ভ্রমণ শেষে বান্দরবান সদর হয়ে রাঙামাটি জেলার রাজস্থলীতে ফিরছিলেন। চলন্ত গাড়িতে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ ব্রাশফায়ার করে। এতে গাড়ির চাকা ফুটো রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। তবে ভ্রমণকারীদের কেউই গুলিবিদ্ধ হয়নি। গাড়িটি উল্টে যাওয়ায় কয়েকজন আঘাত পেয়ে আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে হামলাটি পাহাড়ের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধের কোনো বিষয়। কারণ ভ্রমণকারীরা সবাই রাঙামাটি জেলার বাসিন্দার।
বান্দরবান সদর থানার ওসি শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গাড়িতে ১৯ জন ভ্রমণকারী ছিলেন। ব্রাশফায়ারের কারণে গাড়িটি উল্টে খাদে পড়ে ৪ জন নারী আহত হন।