টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট, অ্যানালিস্টরা নিশ্চয়ই জিম্বাবুয়ের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচার-বিশ্লেষণ শুরু করে দিয়েছেন। শেষ ৫-৬ টেস্টে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ স্কোর কত? তাদের দেশে ও বিদেশে সর্বোচ্চ কত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে? এসব নিশ্চয়ই পর্যালোচনা হচ্ছে।
ইতিহাস আশার আলো জ্বালাচ্ছে। পরিসংখ্যান জানিয়ে দিচ্ছে, এরই মধ্যে বাংলাদেশ যত রানে লিড নিয়েছে, টেস্টে জিম্বাবুয়ের তত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও নেই।
জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড হলো পাকিস্তানের সাথে। ১৯৯৮ সালে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল, গ্রান্ট ফ্লাওয়াররা পেশোয়ারে ১৬২ রান তাড়া করে ৭ উইকেটে জিতেছিলেন।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময় রান খরায় ভোগা জিম্বাবুইয়ানরা শেষ ৪০০ রান করেছিল দেড় বছর আগে, সেই ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবং সেটা এই হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪০৬ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৭/৭ ইনিংস ঘোষণায় টেস্ট করেছিল জিম্বাবুয়ে। ওই ড্র‘র পর শেষ ৫ টেস্টে একবারের জন্য ৪০০ করতে পারেনি তারা।
তারপর গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা টেস্টে ইনিংস পরাজয়ের ম্যাচে বাংলাদেশের ৫৬০ রানের জবাবে যথাক্রমে ২৬৫ ও ১৮৯ রানে শেষ হয়েছিল জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
বাংলাদেশে খেলতে আসার আগে গত মার্চে আফগানিস্তানের সাথে দুই ম্যাচের ১-১ ‘এ অমীমাংসিত থাকে সিরিজ। প্রথম টেস্টে আফগানিস্তান জয়ী হয় ৬ উইকেটে আর পরের ম্যাচে জিম্বাবুয়ে জেতে ১০ উইকেটে।
ওই দুই ম্যাচের প্রথমটিতে দ্বিতীয় ইনিংসে সাড়ে তিনশোর বেশি (৩৬৫ রান) করেও ৬ উইকেটে হারে জিম্বাবুইয়ানরা। কাজেই দেখা যাচ্ছে এ দলটির জন্য ৪০০+ টার্গেটই অনেক বড় ও কঠিন।
এদিকে আজ তৃতীয় দিন বল তেমন না ঘুরলেও সাকিব-মিরাজের স্পিনেই কুপোকাত হয়েছে স্বাগতিকরা। টপ অর্ডারের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান মিলটন সাম্বা, তাকুজওয়ানাসে কাইতানো, অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর আর উইকেটকিপার রেগিস চাকাভা ছাড়া আর কেউই মিরাজ-সাকিবের সামনে সাবলীল ব্যাটিং করতে পারেননি।
আড়ষ্ট ও জবুথবু হয়ে খেলতে খেলতে আউট হয়েছেন একেকজন। বিশেষ করে শেষ ৫ জন একদমই স্বচ্ছন্দে খেলতে পারেননি। তাই ১৫ রানে পতন ঘটেছে শেষ ৫ উইকেটের।
তাই ধরে নেয়া যায়, ৪০০-৪৫০ রানে এগিয়ে থাকলেই হয়তো ইনিংস ঘোষণা করে দেবেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। যদিও এই ইনিংস ঘোষণার আগে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট নিশ্চয়ই ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নেবে।
কারন এই বছর ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে আছে তিক্ত অভিজ্ঞতা। ক্যারিবীয়দের ৩৯৫ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট ছুড়ে দিয়ে উল্টো নিজেরা ৩ উইকেটের অপ্রত্যাশিত পরাজয় দেখতে হয়েছিল টাইগারদের।
রানের পাশাপাশি সময়টাও কিন্তু ফ্যাক্টর। যত কম সময় দেয়া হবে, স্বাগতিকদের ম্যাচ ড্র করা ততই সহজ হবে। কাজেই আগামীকাল শনিবার হয়তো চা বিরতির সময় কিংবা ৪৩০+ রানের লিড হলে তারও আধঘন্টা খানেক আগেও ইনিংস ঘোষণা করতে পারেন মুমিনুল। তাতে জিম্বাবুইয়ানদের অলআউট করার জন্য অন্তত ১২০-১২৫ ওভার হাতে থাকবে।
ক্রিকেট সব সময়ই অনিশ্চয়তায় ভরা। যে কোনো সময় যে কোনো ঘটনাই ঘটে যায়। তারপরও এখন জিম্বাবুইয়ানদের যে অস্থিতিশীল অবস্থা, তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্সের মতো ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে টাইগারদের সর্বনাশ করার সম্ভাবনা খুব কম।