নড়াইল -২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তার পিতা গোলাম মুর্তজা স্বপনসহ ২৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এ মামলায় দুজন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার সকালে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার মূখ্য সংগঠক কাজি ইয়াজুর রহমান বাবু বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেন।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আশিকুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, আসামিরা স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মী ও গুন্ডা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, খুনী, অস্ত্রধারী ব্যক্তি। গত ৪ আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার কর্মসূচি চলাকালে লোহাগড়ার সি এন্ড বি চৌরাস্তায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে বেধড়ক মারপিট করে অভিযুক্তরা। বর্তমান নড়াইল জেলা সমন্বয়ক নেতা কাজী ইয়াজুর রহমানসহ আরও ১৩ জন শিক্ষার্থীকে রামদা, বাঁশের লাঠি, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন। এসময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়া ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে মামলা বিবরণীতে বাদী উল্লেখ করেন।
মামলায় মাশরাফি ও তার পিতা ছাড়াও সদ্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি নাঈম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল শিকদার নীল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ মশিয়ূর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল হক রোম, সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল আমীর লিটু, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের ২৯৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত সাড়ে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান জানান, এ মামলায় উপজেলার চরকরফা গ্রানের জুন্নু মুন্সি এবং বয়রা গ্রামের আজাদ শেখ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদেরকে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নড়াইল সদর থানা ও লোহাগড়া থানায় নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজাসহ আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নামে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং এসব মামলায় একাধিক নেতা কর্মীকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ।