পরিবারে সচ্ছলতা আনতে দেশের মায়া ত্যাগ করে ১৫ দিন আগে পাড়ি দিয়েছিলেন মধ্যপ্রচ্যের ওমানে। পরিবারের সবার অনেক আশা ও স্বপ্ন ছিল ওমান প্রবাসী ইকাবালে উপার্জিত অর্থে এ পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা আসবে। কিন্তু বিধিবাম ওমানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল সব আশা আকাঙ্খা। দুঃস্বপ্নে বিলীন হয়ে গেলো সচ্ছলতার স্বপ্ন। স্বপ্নের পরিবর্তে পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম। আর অপেক্ষার প্রহর গুনছে লাশের। কবে, কখন, কিভাবে দেশে আসবে ইকবালের লাশ।
ছেলে হারানো বাবা-মায়ের আকাশ ভারী করা আহাজারি। ১০ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে বুকে নিয়ে স্ত্রীর কান্না আর চোখের পানি যেন থামছেইনা। নির্বাক হয়ে পড়েছেন ভাইবোনসহ আত্মীয়- স্বজনরা।
গত মঙ্গলবার (২১ জুন) রাত ১০ টায় মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দা মো. ইকবাল হোসেন (৩২)।
ইকবাল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ৪নং মরিয়মনগর ইউনিয়নের পাঁচবাড়ি গ্রামের আবুল কালামের পুত্র।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওমান প্রবাসী শাহেদ আলম আশরাফী জানান, গত ৬ জুন ওমানে আসেন। ২১ জুন সে ওমানে দেশের কাজ করার অনুমোদন পত্র (ওয়ার্ক পারমিট কার্ড) পেয়েছিলেন। সেই খুশিতে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বাসায় খাওয়ার আয়োজন করে ইকবাল। রাতে সাইকেল চালিয়ে ওমানের একটি হোটেল থেকে খাবার আনতে গিয়ে ফেরার পথে আলওয়ালী এলাকায় আসার পর পেছন থেকে আসা মালবাহী গাড়ি ধাক্কা দিলে ছিটকে পাকা সড়কে পড়ে যান ইকবাল। মাথায় আঘাত পাওয়ায় নাক মুখ ও কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। স্থানীয় পথচারীরা ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইকবাল মারা যান।
এদিকে ইকবালের মৃত্যুর সংবাদ গ্রামের বাড়ীতে পৌঁছলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুরু হয় শোকের মাতম। বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার স্ত্রী। ছেলের অকাল মৃত্যুর সংবাদের শোকে বাকরুদ্ধ পিতা-মাতা ও পরিবার। তাদেরকে সান্ত্বনা দেয়ার সাধ্য যেন নেই কারো। শোক শুধু ওই পরিবারে নয়, গোটা এলাকায় চলছে শোকের মাতম। সদা হাস্যোজ্জ্বল সদালাপি ইকবালের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। তাই শোকাহত গ্রামবাসী ভীড় করছেন তাঁর গ্রামের বাড়ীতে।
নিহত ইকবালের লাশ দেশে আনতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা চেয়েছেন তাঁর পিতা আবুল কালাম।