মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
কক্সবাজার জেলায় ১০ম বারের মতো শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারি অফিসার মহসিন ও শ্রেষ্ঠ অস্ত্র উদ্ধারকারী সোলায়মান লোহাগড়ায় নবগঙ্গা ডিগ্রী কলেজের দূর্নীতিবাজ সভাপতি রাশিদুল বাশার ডলারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মুন্সী নজরুল ইসলামের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  মিল্টন ব্লেড-ছুরি দিয়ে নিজেই অপারেশন করতেন, তথ্য জানালো ডিবি মধুখালিতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা বিএনপির দন্তত কমিটির বিচার দাবি লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ  লোহাগড়ায় বিএনপির উদ্যোগে সাধারণ মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি- স্যালাইন ও বিস্কুট বিতরণ চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি শিক্ষার্থীবান্ধব হবে কবে? ঈদগাঁও উপজেলার নির্বাচনে সুবিধাজনক স্থানে আবু তালেব, লড়ে যাবেন সেলিম আকবর এবং শামশু। আমরা চাই নির্বাচনে সবাই অংশগ্রহন করুক, যত বেশী অংশ গ্রহন করবে ততবেশী প্রতিযোগিতা পূর্ণ হবে,

নিরাপত্তাকর্মীদের ন্যূনতম মজুরি হচ্ছে ৯১৪০ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১

সিকিউরিটি সার্ভিস’ শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের (নিরাপত্তাকর্মী) ন্যূনতম মাসিক মজুরি হবে ৯ হাজার ১৪০ টাকা। এ খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির খসড়া হারের সুপারিশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিম্নতম মজুরি বোর্ড এ খসড়াটি প্রস্তুত করেছে। সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে শিগগিরই এটি চূড়ান্ত করে আদেশ জারি করা হবে।

শ্রমিকদের জীবনযাপন ব্যয়, জীবনযাপনের মান, উৎপাদন খরচ, উৎপাদনশীলতা, উৎপাদিত দ্রব্যের মূল্য, মুদ্রাস্ফীতি, কাজের ধরন, ঝুঁকি ও মান, ব্যবসায়িক সামর্থ্য, দেশের এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় পর্যালোচনা বিবেচনা করে শ্রমিক ও কর্মচারীদের গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৪ শ্রেণিতে ভাগ করে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হচ্ছে।

 সিকিউরিটি সার্ভিস দেয়া কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা কর্মীদের ন্যায্য মজুরি দেয় না। এমন প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তাকর্মীদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের উদ্যোগ নিল সরকার। 

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সিকিউরিটি সার্ভিস একটি বড় সেক্টরে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক কোম্পানি গড়ে উঠেছে। এসব কোম্পানি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তারক্ষায় কর্মী সরবরাহ করে থাকে।

সিকিউরিটি সার্ভিস দেয়া কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে—সিকিউরিটি সার্ভিসের কর্মীদের সরকার নির্ধারিত কোনো ন্যূনতম মজুরি নেই। ফলে তারা কর্মীদের ন্যায্য মজুরি দেয় না। এমন প্রেক্ষাপটে সিকিউরিটি সার্ভিসের নিরাপত্তাকর্মীদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের উদ্যোগ নেয় সরকার।

নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সিকিউরিটি সার্ভিসের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি খসড়া সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছে। সুপারিশের বিষয়ে এখন সংশ্লিষ্টদের মতামত নেয়া হচ্ছে। ন্যূনতম মজুরির খসড়া সুপারিশের বিষয়ে কোনো মতামত বা অভিযোগ থাকলে তা ১৪ দিনের মধ্যে আমাদের দফতরে দাখিল করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপর বোর্ডে একটি মিটিং হবে। যে মতামতগুলো আসবে, তা ওই মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে। পরে তা চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে (শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়) পাঠানো হবে। শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে তা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। এরপরই সিকিউরিটি সার্ভিস খাতের ন্যূনতম মজুরির গেজেট হবে।’

 চাকরির বয়স এক বছর হলে শ্রমিকদের মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে মজুরি বাড়বে। পরবর্তী বছর ক্রমবর্ধমান হারে ফের মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে বাড়বে। 

খসড়া অনুযায়ী, শ্রমিকদের ক্ষেত্রে গ্রেড-১-এ রয়েছেন সিকিউরিটি ইন্সপেক্টর, সিকিউরিটি শিফট ইনচার্জ, জোন কমান্ডার ও গানম্যান। গ্রেড-২-এ রয়েছেন সিকিউরিটি সুপারভাইজার, সহকারী জোন কমান্ডার, এ টি এম সেল চেকার।

সহকারী সিকিউরিটি সুপারভাইজার, সিনিয়র সিকিউরিটি গার্ড থাকবেন গ্রেড-৩-এ; সিকিউরিটি গার্ড থাকবেন গ্রেড-৪-এ। কর্মচারীদের ক্ষেত্রে গ্রেড-১-এ রয়েছেন ট্রান্সপোর্ট সুপারিনটেনডেন্ট, ট্রান্সপোর্ট সুপারভাইজার, অডিটর, উচ্চমান সহকারী, এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট ও হিসাবরক্ষক।

গ্রেড-২-এ আছেন কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারী, ক্যাশ সহকারী, স্টোর কিপার, টেলিফোন অপারেটর কাম-রিসিপশনিস্ট। ড্রাইভার, মেকানিক, ইলেকট্রিশিয়ান রয়েছেন গ্রেড-৩-এ। কর্মচারীদের মধ্যে পিয়ন (অফিস সহায়ক), লিফটম্যান, কুক, মশালচি, ক্লিনার (পরিচ্ছন্নতাকর্মী), মেসেঞ্জার, মালি, টি-বয়/ক্যান্টিন বয় রয়েছেন গ্রেড-৪-এ।

সুপারিশে ‘সিকিউরিটি সার্ভিসেস’ শিল্পের গ্রেড-এ একজন শ্রমিকের ন্যূনতম মোট মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ১৪০ টাকা। অপরদিকে গ্রেড-৪-এর একজন কর্মচারীর মোট মজুরি ৮ হাজার ৭২০ টাকা।

মূল মজুরির সঙ্গে যুক্ত হবে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা। সব গ্রেডেই শ্রমিক-কর্মচারীদের বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকা, জেলা শহর ও অন্যান্য শহর- এই দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

খসড়া মজুরি কাঠামো অনুযায়ী, শিক্ষানবিশকালে একজন শ্রমিক ও কর্মচারী মাসিক সর্বসাকুল্যে ৭ হাজার টাকা পাবেন। তবে শ্রমিকদের শিক্ষানবিশকাল হবে ৩ মাস। তবে প্রথম তিন মাসে মান নির্ণয় করা সম্ভব না হলে শিক্ষানবিশকাল আরও ৩ মাস বাড়ানো যাবে। কর্মচারীদের শিক্ষানবিশ কাল হবে ৬ মাস।

সিকিউরিটি সার্ভিসের সব গ্রেডের শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য বাড়িভাড়া ভাতা বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় হবে মূল মজুরির ৫০ শতাংশ এবং জেলা শহর ও অন্যান্য এলাকায় হবে মূল মজুরির ৪০ শতাংশ। সব গ্রেডের শ্রমিক-কর্মচারী এক হাজার টাকা করে চিকিৎসা ভাতা পাবেন।

যাতায়াত ভাতা সব গ্রেডের বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশনের শ্রমিক-কর্মচারীরা পাবেন ৫০০ টাকা, জেলা শহর ও অন্যান্য এলাকার শ্রমিক-কর্মচারীরা পাবেন ৩০০ টাকা।

 

খসড়া সুপারিশ অনুযায়ী, শ্রমিকদের গ্রেড-১-এর মূল বেতন ৮ হাজার ৪০০ টাকা, গ্রেড-২-এ ৭ হাজার ১০০ টাকা, গ্রেড-৩-এ ৬ হাজার ১০০ টাকা, গ্রেড-৪-এ ৫ হাজার ৬০০ টাকা।

এক্ষেত্রে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও যাতায়াত ভাতাসহ গ্রেড-১-এর বিভাগীয় শহরের শ্রমিকের মোট মজুরি ১৪ হাজার টাকা, জেলা শহরের শ্রমিকের ১৩ হাজার ৬০ টাকা।

মোট মজুরি গ্রেড-২-এ বিভাগীয় শহরের শ্রমিকের ১২ হাজার ৫০ টাকা, জেলা শহরের শ্রমিকদের ১১ হাজার ২৪০ টাকা। গ্রেড-৩-এ বিভাগীয় শহরে ১০ হাজার ৫৫০ টাকা, জেলা শহরে ৯ হাজার ৮৪০ টাকা এবং বিভাগের গ্রেড-৪-এর শ্রমিক ৯ হাজার ৮০০ টাকা, জেলার শ্রমিকদের ৯ হাজার ১৪০ টাকা।

কর্মচারীদের গ্রেড-১-এ মূল বেতন ৮ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রেড-২-এ ৭ হাজার ২০০ টাকা, গ্রেড-৩-এ ৬ হাজার টাকা, গ্রেড-৪-এ ৫ হাজার ৩০০ টাকা।

এক্ষেত্রে গ্রেড-১-এ বিভাগীয় শহরে শ্রমিকদের মোট বেতন ১৪ হাজার ১৫০ টাকা, জেলা শহরে মোট বেতন ১৩ হাজার ২০০ টাকা। গ্রেড-২-এ মোট বেতন ১২ হাজার ২০০ ও ১১ হাজার ৩৮০ টাকা। মোট বেতন গ্রেড-৩-এ ১০ হাজার ৪০০ টাকা (বিভাগীয় শহর) ও ৯ হাজার ৭০০ টাকা (জেলা শহর), গ্রেড-৪-এ ৯ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ৮ হাজার ৭২০ টাকা।

নিম্নতম মজুরি বোর্ড থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিম্নতম মজুরি বোর্ডে ‘সিকিউরিটি সার্ভিস’ শিল্প সেক্টরের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য মালিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য নিযোগ করা হয়। বোর্ড এই শিল্প সেক্টরে নিযুক্ত সব শ্রেণির শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি হারের সুপারিশ দিতে একাধিক সভা হয়।

 

বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ঢাকার এলিট সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড (এলিট ফোর্স), যমুনা সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড (জেএসএস) এবং ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএসএস) কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ এবং তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। বোর্ডের সভায় সংশ্লিষ্ট শিল্পের মালিক ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্যদের দাখিল করা মজুরি প্রস্তাবসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে এই ন্যূনতম মজুরি সুপারিশ করেছে।

খসড়ায় বলা হয়—এই মজুরি মাসিক ন্যূনতম মজুরি হিসাবে গণ্য হবে। সিকিউরিটি সার্ভিসের কোনো প্রতিষ্ঠানে এই মজুরির চেয়ে কম মজুরি দিতে পারবে না। তবে ন্যূনতম মজুরির চেয়ে বেশি হারে মজুরি দেয়া হয়ে থাকলে তা কমানো যাবে না।

চাকরির বয়স এক বছর হলে শ্রমিকদের মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে মজুরি বাড়বে। পরবর্তী বছর ক্রমবর্ধমান হারে ফের মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে বাড়বে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

 

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..