নেত্রকোণা-৪ (মোহনগঞ্জ-মদন-খালিয়াজুরী) আসনের সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন (৭৬) বছর বয়সে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ (মঙ্গলবার ১১জুলাই) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও শ্বাসকষ্ট বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতা রোগে ভুগছিলেন।
মোহনগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ইকবাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে রেবেকা মমিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি (বৃহস্পতিবার ২৯ জুন) তাঁকে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আজ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
রেবেকা মমিনের গ্রামের বাড়ি মোহনগঞ্জ পৌর শহরের কাজিয়াটিতে। তিনি এক মেয়েসহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
রেবেকা মমিন ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য প্রয়াত খাদ্যমন্ত্রী আবদুল মমিনের স্ত্রী। ষাটের দশকের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে রাজনীতি শুরু করেন রেবেকা মমিন। তারপর বিভিন্ন সময়ে দলের পদে ছিলেন। নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য রেবেকা মমিন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর টানা তিনবার ওই আসন থেকে নির্বাচিত হন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।
রেবেকা মমিন দুই বছর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের নিয়ে আদর্শ গ্রাম গড়ে তোলার জন্য মোহনগঞ্জের কাজিয়াটি মৌজায় পারিবারিক সম্পত্তি থেকে ১ একর ৬৪ শতক জমি দান করেন।
মোহনগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদ ইকবাল বলেন, রেবেকা মমিন ব্যক্তিগত জীবনে খুব সৎ ও আদর্শিক মানুষ ছিলেন। তিনি খুব সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। তাঁর পরিবার স্কুল, কলেজ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, সাবরেজিস্ট্রি অফিস, বাজার, মসজিদ ও রেললাইন নির্মাণের জন্য ইতিপূর্বেও শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি বিনা শর্তে দান করেছে।
তিনি জানান, তাঁর প্রথম জানাজা সকাল ১০টা ধানমন্ডি ৩ নম্বর রোডে বায়তুল আমান মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় জানাজা বেলা আড়াইটায় নেত্রকোণা’র মুক্তাপাড়া মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় তৃতীয় জানাজার পর মোহনগঞ্জ কাজিয়াটিতে তাঁর নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হবে।