মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন , ই-পেপার
শিরোনামঃ

লক্ষীপুরে এক ইউনিয়নে ২৮ ইটভাটা।

এ জে এম ইসমাইল হোসেন। লক্ষীপুর জেলা প্রতিনিধি ,
  • আপলোডের সময় : সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২২

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অন্তত ২৮টি ইটভাটা। এরমধ্যে এক ওয়ার্ডেই রয়েছে ১৪টি ভাটা। এসব ইটভাটায় উঁচু চিমনি ব্যবহার করা হলেও কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইট পোড়ানের জন্য ভাটাগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। এ জন্য কয়েকশ মণ কাঠ (লাকড়ি) ভাটা এলাকা স্তূপ করা হয়েছে। আশপাশের এলাকা থেকে গাছ কেটে কাঠগুলো মজুদ করা হয়। শ্রমিকরা স্তূপ থেকে মাটি কেটে পানি দিয়ে মণ্ড তৈরি করছেন। অন্যরা ইট তৈরির কাজে ব্যস্ত। ইটগুলো শুকানোর জন্য ওলটপালট করে দিতে দেখা গেছে শিশু শ্রমিকদের।

এক ইউনিয়নে ২৮ ইটভাটা

রফিক ব্রিকসের সত্ত্বাধিকারী রফিক উল্যার ছেলে মিজানুর রহমান জানান, আমাদের ভাটাসহ ২৮টি ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। বাকিগুলো বন্ধ করে দিলে আমারটাও বন্ধ হয়ে যাবে।

আশরাফ ব্রিকসের সত্ত্বাধিকারী মো. আশরাফ জানান, ইউনিয়নের অন্য ২৭টি ইটভাটার মতো তারটিও চলছে। ভাটা চালাতে তার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। অন্য কোনো বৈধ কাগজপত্রও নেই। এগুলো সংগ্রহের চেষ্টা করছেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, প্রতিটি ইটভাটায় অন্তত ২০ একর জমি প্রয়োজন হয়। এতে ১৪টি ইটভাটা একটি ওয়ার্ডের অধিকাংশ জমি দখল করে আছে। ধোঁয়ায় মানুষ প্রতিনিয়ত হাজার হাজার টন কার্বনডাই অক্সাইড গিলে খাচ্ছে। মানুষের শ্বাসতন্ত্রে সমস্যা হচ্ছে। জমির উর্বর মাটিগুলো ইটভাটায় চলে যাচ্ছে। এতে ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

এক ইউনিয়নে ২৮ ইটভাটা

উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহ-সভাপতি আশরাফ আলী চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি চররমিজের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এখানে ১৪টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এগুলো বসতি ও ফসলি জমিতে। এসব ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। ইটভাটার ধোঁয়ায় পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। অবৈধ হওয়া শর্তেও ভাটাগুলো বন্ধ করা হচ্ছে না।

চররমিজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজাহিদুল ইসলাম দিদার বলেন, ভাটার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সম্প্রতি একটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাহিদ হোসেন বলেন, চররমিজ ছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়নেও অনেকগুলো অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে ইটভাটাগুলো গুঁড়িয়ে দেন। ফের ভাটা মালিকরা ইট পোড়াতে শুরু করে।

এক ইউনিয়নে ২৮ ইটভাটা

লক্ষ্মীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, সম্প্রতি আমরা কয়েকটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছি। জরিমানাও করা হয়েছে। অবৈধ ভাটার বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। সিদ্ধান্ত দিলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।

এ ব্যাপারে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশনা রয়েছে অবৈধ ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এসব বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..