নিহত মাহফুজার মোল্যার পরিবারের আহাজারি চাচার পা ধরে বাঁচতে চেয়েও বাঁচতে পারলেন না ভাতিজা মাহফুজার মোল্যা। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চাচার হামলায় খুন হয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বানিয়াবহু গ্রামে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে! নিহতের চাচাতো ভাই ফারুক মোল্যা জানান, আমার দাদীর জমি জাল দলিল করে দখলের চেষ্টা করেন চাচা কদম মোল্যা।
এতে মাহফুজারের বাবা আফসার মোল্যাসহ আমরা চাচার এই কাজে বাধা দেই এবং দলিল জাল করায় আমরা ২০১৯ সালের শেষের দিকে মাগুরা আদালতে একটি মামলা করি। মামলায় চাচা কদম মোল্যাকে হাজতে পাঠায় আদালত। চারমাস জেল খাটার পর চাচা জামিনে বের হয়ে আসে। এরপর আমাদের বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দিতে থাকে। তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে বাড়িতে আমি ও চাচতো ভাই মাহফুজার কথাবলাবলির ভেতর ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে প্রতিপক্ষের লোকজন। এরপর চাচাতো ভাইদের কয়েকজন আমাকে ও মাহফুজারকে ধরে নিয়ে যায়।
বাড়ির পাশে নিয়ে চাচা কদম মোল্যা, তার ছেলেরাসহ তাদের লোকজন রামদা দিয়ে মাহফুজারের গায়ে কোপ দেয়। আমি ও মাহফুজার চাচার পা জড়ায়ে ধরে বাঁচার জন্য চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মাহফুজার মারা যায়। স্থানীয়রা জানান, কলিম উদ্দিন নামের একজন বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন।
তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া মান্নান (৫৫), হাসান (৩৫), জরিনা (৬০) ও গোলাম রসুলসহ(৫৮) কয়েকজন আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। মাগুরা পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো: হাফিজুর রহমান, মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দীন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার মিজানুর রহমান জানান, সম্প্রতি বিরোধপূর্ণ জমি কদম মোল্যা ও তার লোকজন দখল করতে গেলে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে মিমাংসার জন্য গত সোমবার উভয়পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকা হয়। আফসার মোল্যার লোকজন উপস্থিত হলেও কদম মোল্যার লোকজন উপস্থিত হয়নি। মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দীন জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।