নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে সরকারি আশ্রয়ণের ঘর দেওয়ার আশ্বাসে এক নারীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
তবে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ওই নারীর ভাগ্যে জুটেনি সরকারি ঘর। পরে তিনি ওই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযুক্তের নাম মো. শাহীন আকন্দ (৪৮)। তিনি উপজেলার ৫নং সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের কেওয়ারদিঘী গ্রামের মৃত আ. মান্নানের ছেলে। শাহীন আওয়ামী লীগ কর্মী। তবে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা বলে পরিচয় দেন বলে জানা গেছে।
আর ভুক্তভোগী নাসিমা আক্তার একই ইউনিয়নের রামজীবনপুর গ্রামের আলম মিয়ার স্ত্রী।
সোমবার (১১ নভেম্বর) মোহনগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৫ অক্টোবর নাসিমা মোহনগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে নাসিমা আক্তার জানান, সরকারি আশ্রয়ের ঘর পাওয়ার আশায় তিন বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন আকন্দকে ২০ হাজার টাকা দেন নাসিমা। আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় দ্রুত সময়ে ঘর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তবে তিন বছর কেটে গেলেও ঘর আর পাওয়া হয়নি নাসিমার। তবে ঘর না পেয়ে টাকা চাইতে গেলে নাসিমাকে উল্টো হুমকি ধমকি দেন শাহীন। সরকার পতনের পর গত ৪ অক্টোবর টাকা ফেরত চাইতে গেলে ফের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন শাহীন। পরে ২৫ অক্টোবর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন নাসিমা।
ভুক্তভোগী নাসিমা আক্তার জানান, গরিব মানুষ ভাঙা ঘরে ত্রিপলের ছাউনি দিয়ে পোলাপান নিয়ে বসবাস করি। শাহীন এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা পরিচয় দেয়। উপজেলার বড় বড় নেতাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক। আমাকে ঘর পাইয়ে দিবে বলে অফিস খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা দাবি করে। সুদে ২০ হাজার টাকা এনে তার হাতে তুলে দেই। তিন বছরে সুদ বেড়ে অনেক গুণ হয়েছে। সুদের জের এখনও টেনে যাচ্ছি। কিন্তু তিন বছর পার হলেও আজও ঘর পেলাম না। পরে বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করেছি। অভিযোগের পর তিন হাজার টাকা দিয়েছে। বাকি টাকা না দিয়ে তালবাহানা করছে। হুমকি ধমকিও দিচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা জানান,শাহীনের আওয়ামী লীগের কোনো পদ নেই। শাহীন আওয়ামী লীগ কর্মী।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ কর্মী শাহীন আকন্দ বলেন, অভিযোগটি মিথ্যা। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
মোহনগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন বলেন, ১০ হাজার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন শাহীন। তবে এর মধ্যে ৩ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে বলেও জানিয়েছে। বাকি টাকা দিয়ে দেবে বললেও আজ-কাল করে সময় পার করছেন। আর দুই-একদিন দেখব টাকা ফেরত দেয় কিনা। যদি টাকা ফেরত না দেয় তবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..