আগামীকাল বুধবার সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গ্রন্থাগার ভবনের সামনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে কালকের কর্মসূচির বিষয়ে জানান আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। সংবাদ সম্মেলন শেষে ঢাবির আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণসংযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা।
আন্দোলনের সমন্বয়ক বলেন, বুধবার সকাল-সন্ধ্যা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করা হবে। দেশের সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথ ব্লকেডের আওতায় থাকবে। যদি নির্বাহী বিভাগ থেকে কোনো লিখিত পরিপত্রের মাধ্যমে সকল গ্রেডে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে যৌক্তিক সংস্কারের তথ্য জানানো হয়, তাহলেই আমরা রাজপথ থেকে ক্লাসে ফিরবেন।
এ সময় উচ্চ আদালতে আজ যে দুই শিক্ষার্থী কোটার বিষয়ে রিট করেছেন তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। ব্লকেড সফলে কাল সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগামীকাল বুধবার (১০ জুলাই) শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন।
প্রসঙ্গত, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করে। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেড (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওই পদসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হয়। নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, উপজাতি পাঁচ ও প্রতিবন্ধীদের এক শতাংশ কোটা বাতিল করা হয়।
এই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ বাতিল চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। গত ৫ জুন রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে সরকারের পরিপত্র বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ কোটা বহাল রাখার আদেশ দেয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ৪ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে নিয়মিত আপিল করতে বলেন। ফলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ ও আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে কোটা বহাল থাকছে।