নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ৫নং সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের জয়পুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের জামরুল মিয়ার ছেলে শরীফ মিয়া (২২) খুন হবার ৩৭ দিন পর মোহনগঞ্জ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে।
মামলার আসামি জেল হাজতে আটককৃত মাজহারুল ইসলাম নিজে দায়ের এক কুপ দিয়ে খুন করেছে বলে স্বীকার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (১০ ডিসেম্বর) জয়পুর বাজার থেকে চুল কেটে শরীফ মিয়া বাড়িতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। পরে রাত সাতটা থেকে সাড়ে এগারোটার মধ্যে নিখোঁজ শরীফের গলাকাটা লাশের সন্ধান পাওয়া যায়, ওই গ্রামের ক্ষেতের মধ্যে। থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়মনাতদন্তে লাশ নেত্রকোণায় পাঠায়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাজহারুল ইসলাম (২৮) কে সন্দেহজনকভাবে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন তথ্য পায়নি। তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। মোবাইল ফোনের তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) শরীফুজ্জামান বলেন, গোপন সূত্রে জানতে পারেন, রাতে আসামি বাড়িতে এসে হাতমুখ ধুয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ে। সে লাশ দেখতে যায়নি এবং জানাজাতেও যায়নি। দুই দিনের রিমান্ড আনলে আসামি কোন তথ্য দেয়নি। পরবর্তীতে ২৭ দিন পর শনিবার (৭ জানুয়ারি) বিকালে ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের আজিজুল হকের জমিতে ফয়জুল ইসলাম মলম কাজ করার সময় একটি দাঁড়ালো দা পেয়ে মালিককে অবহিত করে। ঘটনাস্থল থেকে দা উদ্ধার মাজহারুলের দুইভাই ও ভাবিকে আটক করে থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পারেন,আসামির মা ও অন্য এতজন জেলখানায় গিয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং জিজ্ঞাসাবাদে খুন করেছে তার ছেলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে মা সহ জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করলে দুইজনকে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি পর আসামিকে পুনঃরায় রিমান্ডে আনা হলে অকপটে খুন করার কথা স্বীকার করে এবং বর্ণনা দেয়। আসামি বলে আমার ভাবি মাইমোনা (২৫) এর প্রতি খুনজর থাকায় তার সাথে ঝগড়া হয়।
একজন আরেকজনকে জীবন নাশের হুমকি দেয়। যা কাউকে কেউই অবহিত করেনি। আসামি নিজেকে আত্নরক্ষা করার জন্য আটপাড়া উপজেলা কলাপাড়া বাজার থেকে ৬০০ টাকা দিয়ে একটি লম্বা দা কামার দিয়ে বানিয়ে আনে। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ভাবির ঘরে দেখে ফেললে দৌড়ে পালিয়ে আসে এবং হাতাহাতি হয়।ক্ষেতের মাঝখানে পূর্ব থেকে লুকিয়ে রাখা দাঁড়ালো দা দিয়ে এক খুব দিয়েই শরীফকে খুন করে। খুনে ব্যবহারকৃত দা পেলে পালিয়ে যায়।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা শরিফুজ্জামান বলেন,বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন আলামত এর বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে মামলা অগ্রগতি নিয়ে এক পর্যায়ে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসে।
মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, কোন রকম সাক্ষী প্রমাণ ছিল না শরীফ হত্যাকান্ডে। আমার থানার ওসি (তদন্ত) শরীফুজ্জামান এর বিচক্ষণতায় রহস্য উদঘাটিত হয়েছে।
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..