নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের চাচই গ্রামের মোঃ সোহাগ কাজী নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে পর্নগ্রাফী ও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী দুই সন্তানের এক জননী। ২৩ জুলাই লোহাগড়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলা নম্বর ১২/১৪১। সোহাগ কাজী ওই গ্রামের মৃত মুনছুর কাজীর ছেলে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়,ওই নারীর স্বামী ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করায় তার মেয়েকে নিয়ে ওই ইউনিয়নের আড়িয়ারা গ্রামের স্বামীর বাড়িতে থেকে তার মেয়েকে সিডি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনা-নেওয়া করত। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে চাচই গ্রামের মোঃ কাশেম কাজীর মেয়ে শিরিনা খানম এর সাথে পরিচয় সূত্র মোবাইল নম্বর লেনদেন হয়। এরপর শিরিনার কাছ থেকে তার চাচাতো ভাই সোহাগ কাজী মোবাইল নম্বর নিয়ে ওই গৃহবধূর সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন সময়ে ফোন করে তাকে প্রেমের প্রস্তাব ও কুকর্মের প্রস্তাব দিতে থাকে।
এক পর্যায়ে রাজি না হলে তার কন্যা মিমকে অপহরণের হুমকি দেয় এবং এর কিছুদিন পরে সোহাগ ও তার বন্ধু একই গ্রামের আকবর শেখের ছেলে নয়ন শেখকে মোটরসাইকেলে নিয়ে ওই নারীর স্বামীর বাড়ি গিয়ে তার সাথে বাইরে গিয়ে দেখা না করলে তার শিশু কন্যাকে অপহরণের হুমকি দিয়ে চলে যায়। ২০১৯ সালের অক্টোবরের ২৫ তারিখে হঠাৎ সোহাগ কাজী ওই নারীকে ফোন করে রাতে দেখা করতে আসবে জানায় এবং এ বিষয়ে কাউকে বললে ওই বধুকে এ্যাসিড মারবে ও শিশু কন্যাকে তুলে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দিয়ে রাতে এসে ধর্ষন করে এবং ওই দৃশ্য মোবাইলে ধারন করে কয়েকদিন পর ওই বধুর মোবাইলে পাঠিয়ে দিয়ে বলে কথা না শুনলে তার স্বামীকে ও নেটে ওই ভিডিও ছেড়ে ভাইরাল করবে। এরপর থেকে সোহাগ তার সুবিধামতো তাকে জোর করে ধর্ষণ করতে থাকে।
এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, তখন ওই নারী গর্ভবতী ছিল কিন্তু সোহাগ একসময় গর্ভের সন্তান তার বলে দাবি করে এবং ওই ভিডিও তার স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দিলে ২১ সালের ফেব্রুরায়ী মাসের ২৭ তারিখে ওই নারীকে তার স্বামী বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং ২০২১ সালের ১৪ মার্চ
তারিখে তাকে তালাক প্রদান করেন। এটাকে পুঁজি করে সোহাগ ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার তালাকপ্রাপ্ত স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করিয়ে ১ এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ব্লাকমেইল করে ওই গৃহবধূর কাছে থাকা ৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ও নিয়ে নেয়। এ ঘটনার পর থেকে সোহাগ কাজী পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়,
এ ঘটনায় সোহাগ কাজীর সাথে ম্যাসেনজারে কথা হলে তিনি বলেন, ওই নারীকে তার বউ বলে দাবি করে এবং মীমাংসা করে নিবে বলে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ আবু হেনা মিলন এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে মামলার বিষয়টা তিনি নিশ্চিত করে বলেন, আসামী পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।